নিঃসন্দেহে তরুণদের স্বপ্নের চাকরির তালিকায় সবার আগে বিসিএস। এতদিন বিসিএস ও সরকারি চাকরির নানা সুবিধার কথা জানলেও ২০১৮ সালে যৌথভাবে নতুন সুবিধার কথা জানান দিতে আসছে এপ্রিল ও মে মাস।
আপনি যদি বিসিএস ক্যাডার কিংবা সরকারি চাকরিজীবী হন তাহলে আপনার উচিৎ হবে এই লেখাটা না পড়ে আগে সেভ করে রাখা। সেভ করা হয়ে গেলে রেল স্টেশন অথবা বাস কাউন্টারে দৌড় দেওয়া। দৌড়ে গিয়ে ২৬ এপ্রিলের টিকেট কেটে ফেলা। তারপর লেখাটা পড়তে বসা।
কারণ হলো, বিসিএস তথা সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আসছে পূর্ণদৈর্ঘ্য ছুটি। এমন ছুটি হ্যালির ধুমকেতুর মতো কালেভাদ্রে দেখা যায়।
একটু খুলেই বলি। ধরুন- আগামী ২৬ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার। একজন সরকারি চাকরিজীবী কোনোমতে অফিসে যাবেন। হাজিরা খাতায় সিগনেচার করে সহকর্মীদের সাথে এক কাপ চা খেয়ে খানিক গল্প টল্প করে বের হয়ে যাবেন।
শুক্র শনি দুইদিন তো এমনিতেই ছুটি। রবিবার বুদ্ধপূর্ণিমার ছুটি। টানা তিনদিন ছুটি কাটিয়ে তার একটু অসুস্থবোধ হতেই পারে। মাথা ধরা, জ্বর জ্বরভাব, পেট ব্যথা। অসুস্থবোধ না করলেও অফিসে জানিয়ে দিলেন যে তিনি অসুস্থ। গত ছুটিতে যেভাবে বলেছিলেন সেভাবেই গলা ভার ভার করে বসকে ফোন দেবেন। অসুস্থতার দরুন বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না এমন কিছু একটা বসকে বোঝাতে পারলেই যাবেন সোমবারের ছুটি। তিন আর একে হলো চার।
মঙ্গলবার পহেলা মে, শ্রমিক দিবসের ছুটি। বুধবার শব-ই বরাতের বন্ধ। চার দুয়ে ছয়।
চলে এলো আবার বৃহস্পতিবার। বৃহস্পতিবার দুইটা কাজ করতে পারবেন তিনি।
এবছর কেন যেন ঝড় বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। বুধবার রাতে বৃষ্টি হলে বসকে ফোন করে বলবেন, বাসার সামনে সাঁতারসমান পানি জমেছে। কোনোভাবেই বের হতে পারছেন না। ফলে অফিসে যাওয়া এতটাই অসম্ভব যে অসম্ভবকে সম্ভব করাই যার কাজ তার পক্ষেও সম্ভব না।
বৃষ্টি না হলেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। অফিসে যাবেন এবং গত বৃহস্পতিবারের মতো হাজিরা খাতায় সাইন করে, সহকর্মীদের সাথে বসে চা খেয়ে একটু গফ সফ করে বের হয়ে যাবেন।
এরপর তো শুক্র ও শনিবার বন্ধ। ৫ মে রবিবার আর কোনো উপায় নেই। অফিস করতেই হবে। ২৬ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত লম্বা ছুটি কাটিয়ে ধীরে সুস্থে হয়তো অফিসে যাবেন।
এমন লম্বা ছুটি আপনি তখনই পাবেন যখন আপনার চাকরিটা হবে সরকারি। পদ্মাসেতুর মতো লম্বা ছুটি পাওয়া যায় বলেই বিসিএস ও অন্যান্য সরকারী চাকরির জন্য তরুণরা মরিয়া হয়ে যায় কি না কে জানে।