পেশাদার ক্রিকেটার ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা-বিভাগের হয়ে অনুর্ধ্ব ১৩, ১৫, ১৬, ১৮ খেলেছেন। প্রিমিয়ার লিগেও নিয়মিত খেলতেন। ২০০৯ সালে হঠাৎ পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়। অনেক চেষ্টা করেও আর ক্রিকেটে নিয়মিত হতে পারেননি। শেষে ফাস্ট বোলিং ছেড়ে স্পিন বোলিংয়ে ঢুকে চেষ্টা করেও ফিরতে পারেননি ক্রিকেটে। এরপর পেশাদার ক্রিকেট থেকে সরাসরি প্রবেশ শোবিজের আলো ঝলমলে আঙিনায়।
যাকে নিয়ে এতো কথা, তিনি শেহজাদ ওমর। শোবিজে শুরুটা র্যাম্প, বিলবোর্ডের মডেল ও টিভিসি দিয়ে হলেও এখন নাটকে অভিনয় করেন। সেখান থেকে পা রেখেছেন চলচ্চিত্রে। জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘মোনা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রথমবার চলচ্চিত্রে কাজ করলেন শেহজাদ ওমর।
চ্যানেল আই অনলাইনকে শেহজাদ বলেন, ইনজুরির কারণে ক্রিকেট ছাড়তে হয়েছিল। চিকিৎসক বলেছিলেন, আর খেলতে পারবো না। আমার সাথে খেলতো ইয়াসির রাব্বী, সে এখন ন্যাশনাল টিমে। এছাড়া ইরফান শুক্কুর আছে। আমরা একসঙ্গে খেলতাম। ইনজুরিতে না পড়তাম হয়তো আমিও খেলতে পারতাম। বেশি দৌড়ঝাঁপ করলে এখনও আমার পায়ে সমস্যা হয়।
আর ‘ক্রিকেট খেলতে না পারা’ নিয়ে মাথা না ঘামানো শেহজাদ ওমর বলেন, যেটা অতীত সেটা ভেবে তো আর লাভ নাই। এখন আমি অভিনয়ের জায়গাটা নিয়ে ভাবছি। আমার আল্টিমেট গোল হচ্ছে ভালো ভালো কাজ করা। ভালো চরিত্র প্লে করে অভিনয়ের সঙ্গে থাকতে চাই। আমি আসলে ভালো অভিনয়টাই করতে চাই, সিনেমা হোক বা ওয়েব ভিত্তিক কনটেন্ট হোক।
১০-১২টির মতো টিভিসি করেছেন শেহজাদ ওমর। ফ্যাশন শো করেছেন দুই শতাধিক। শ’খানেক ব্র্যান্ডের পোশাকের বিলবোর্ড মডেল হয়েছেন। রাজধানীর সড়কগুলোতে অনেকেই হয়তো তাকে দেখেছেন! নাটক করেছেন ৩০টির মতো। ভালোবাসা দিবসে ‘ডিয়ার ভ্যালেন্টাইন’ নাটকে অভিনয় প্রশংসা এনে দিয়েছে তাকে।
এবার শেহজাদ ওমর হতে যাচ্ছেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘মোনা’ চলচ্চিত্রের নায়ক। শুটিং করে বেশ তৃপ্তির কথা জানান তিনি।
শেহজাদ ওমর বলেন, ২০১৩-১৪ দু-বছর টুকটাক নাটক করেছি। পরে ৩টি সিনেমায় নাম লেখাই। তখন দেশে চরমভাবে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করায় ২টি সিনেমার শুটিং শুরুই হয়নি, বাকি একটির শুটিং শুরু হয়ে বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৫ বছর মিডিয়াতে ছিলাম না। আবার যখন কামব্যাক করি তখন থেকে অভিনয়ে মনোযোগ দেই।
‘মিডিয়াতে ফেরার পর প্রাচ্যনাটে একবছর ধরে অভিনয়ের কোর্স করি। পরে আলোচিত ‘মহানগর’ ওয়েব সিরিজে কাজ করি।’
জাজের ‘মোনা’ চলচ্চিত্রে সুযোগ পাওয়া প্রসঙ্গে শেহজাদ ওমর বলেন, জাজ নতুন মুখ খুঁজছিল জেনে বায়োডাটা পাঠিয়েছিলাম। এরপর আমার কাজের রেফারেন্স দেখিয়ে অডিশন দেই। পরিচালক, ডিওপি আমার কাজ ও অডিশন দেখে পছন্দ করেন। পরে জাজের উর্দ্ধতন কর্তারা আরেকবার অডিশন নিয়ে জানান, ‘মোনা’ ছবির জন্য আমাকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
কামরুজ্জামান রোমানের পরিচালনায় ‘মোনা’ চলচ্চিত্রে চারজন নতুন মুখের একজন শেহজাদ ওমর। আরও অভিনয় করছেন তারিক আনাম খান, দীপা খন্দকার প্রমুখ। এটি কোনো ওয়েব কনটেন্ট নয়, পুরোপুরি সিনেমা; মুক্তি দেয়া হবে সিনেমা হলে। গেল মাসে পুরো শুটিং শেষ হয়েছে।
শেহজাদ ওমর বলেন, টিভিসি বা নাটকের চেয়ে সিনেমার ব্যাপারটা একদমই আলাদা। এখানে ভালো কাজ ডেলিভারির জন্য একাধিকবার সুযোগ দেয়া হয়। ঠিকভাবে কাজ করার জন্য প্রস্তুতির ব্যাপার থাকে। সিনেমার পুরো পরিবেশটাই আলাদা লেগেছে। শুধুমাত্র ভালো কাজের জন্য দুই সপ্তাহ পুরো টিমে পরিবার-ফোন সংযোগ সব থেকে দূরে ছিলাম। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এর মধ্যে দুই লটে আমরা শুটিং করি। এটা আমার জীবনের নতুন অভিজ্ঞতা। অনেককিছু শিখতে পেরেছি।
“একটা ব্যাপার আমার খুব ভালো লেগেছে, শুটিংয়ে অনেকেই বলেছে, ‘হিরোর জন্য খাবার আনো’। ‘হিরো’ বলে সম্বোধন করে অন্যভাবে আপ্যায়ন করাটা আমার খুব ভালো লেগেছে।”