রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী দিয়া-রাজীবের মৃত্যুর ঘটনায় মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবিরা। একইসঙ্গে তারা উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানিয়েছেন।
রায়ের পর তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় তারা এসব কথা বলেন।
রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬) নিহতের ঘটনায় করা মামলায় জাবালে নূর পরিবহনের চালকসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন।
![](https://i0.wp.com/www.channelionline.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-Reneta-16-04-2024.gif?fit=300%2C250&ssl=1)
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ঘাতক বাসচালক মাসুম বিল্লার আইনজীবি হাসিম উদ্দিন বলেন, রায়ে আমরা অবশ্যই অসন্তুষ্ট। ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তাদেরকে সন্তুষ্ট করতে আদালত এ রায় দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় কোন চাক্ষুস সাক্ষী পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির প্রেক্ষিতে এ রায়টি দেওয়া হয়েছে। রায়ের কাগজ পেলে বিষয়গুলো বুঝতে পারবো। আমরা উচ্চ আদালতে যাব, আশা করছি উচ্চ আদালতে গেলে আমরা ন্যয় বিচার পাবো।
তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনা স্থলের কাছেই বাসস্ট্যান্ড থাকা স্বত্ত্বেও ফ্লাই ওভারের গোড়ায় ছাত্ররা জোর করে বাস থামাতো। সেদিনও সম্ভবত এমন কিছু ঘটেছিলো, যেখানে বাসের ড্রাইভার কোনভাবেই দায়ী নয়।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আরেক বাসের চালক জুবায়ের সুমনের আইনজীবি টি এম আসাদুল হক বলেন, আমরা ন্যয়বিচার পাইনি, অবশ্যই আমরা উচ্চ আদালতে যাব। সাক্ষ্য প্রমাণে বলা হয়েছে আমার মক্কেল জুবায়ের সুমনের গাড়িটি চলমান ছিলো। পেছন থেকে অন্য একটি গাড়ি তার গাড়িটিকে ধাক্কা দেয়। তার গাড়ি দ্বারা কোন হতাহতের ঘটনা হয়নি। আসামিকে যাবজ্জীবন দিতে হলে মৃত্যুর কারণ প্রমান করতে হয়। কিন্তু সুমনের গাড়ির দ্বারা কোন হত্যাকাণ্ড ঘটেনি।
২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে প্রাণ হারায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)। আহত হয় আরও ১০-১৫ শিক্ষার্থী।
ওই দিনই নিহত মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন।
২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন। ২৫শে অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন।