বিটিভি’র ৫১তম বর্ষপুর্তিতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের নবীন-প্রবীণ কর্মকর্তা শিল্পী কলাকুশলী এবং নেপথ্যকর্মীদের মিলন মেলায় মুখর ছিল চ্যানেল আই ছাদ বারান্দা। চ্যানেল আই আয়োজিত এই আনন্দ মিলনে রবি ঠাকুরের সুরের লহরীতে শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কণ্ঠমাধুর্যে শীতের কুয়াশামাখা সকালে সুন্দর আর সিগ্ধতার বারতা নিয়ে চ্যানেল আই ছাদ বারান্দায় বিটিভির ৫২ বছরে পদার্পনে জন্মদিন উদযাপন করা হয়।
১৯৬৪ সালের এমন এক সকালেই যাত্রা শুরু করেছিলো দেশের প্রথম টেলিভিশন বিটিভি। দীর্ঘ এই পথচলায় একনিষ্টভাবে যারা সঙ্গে ছিলেন, সেই গুনিজনদের একত্রিত করতেই এই মহামিলনের আয়োজন করে চ্যানেল ্।
চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, গণমাধ্যম হিসেবে বাংলা টেলিভিশনের অর্ধশত বছর আমরা পার করেছি, এটা আমাদের জন্যে, আমাদের সংস্কৃতির জন্যে, আমাদের বাংলা ভাষার জন্যে গর্বের বিষয়। টেলিভিশনের জন্য আজকের এই দিনে আমরা হাজার বছরের একটা রুপ দেখতে পেরেছি। সেই টেলিভিশন থেকেই বাংলাদেশে আরো ২৭টি বেসরকারী টেলিভিশনের জন্ম।বাংলাদেশ টেলিভিশনকে বলবো আমরা সূতিকাগার।যদি প্রতিষ্ঠানটিকে গুরু বলি আর আমরা হচ্ছি শিষ্য।তাহলে আজকে চ্যানেল আইয়ের ছাদ বারান্দায় গুরু আর শিষ্যের এক মিলনমেলা ”
শীতের পিঠা আর বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশনায় উপভোগ্য সকালে আড্ডায় মেতে ওঠেন স্মৃতিকাতর মানুষগুলো। তুলে ধরেন তাদের সোনালী সময়ের কথা।
বিটিভির প্রথম প্রধান অধিকর্তা জামিল চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫১তম বর্ষপূর্তিতে টেলিভিশনের দর্শক ও টেলিভিশনের পেছনে যারা কাজ করেন তাদের আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
মাহবুব জামিল বলেন, “সমাজের সকল ক্ষেত্রে সবস্তরের মানুষের কাছে পৌছে দিতে পেরেছিল এই টেলিভিশন।”
ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, “যখন টেলিভিশন শুরু হয় তখন এটাকে পাইলট টেলিভিশন বলা হত। আমরা ঘোষণা করতাম ঢাকা পাইলট টেলিভিশন ”
সৈয়দ লুৎফী আলী বলেন, “সব সময় আমরা উৎকণ্ঠার ভেতর থাকতাম। কখন কি হয়।”
অভিনেত্রী জাহানারা আহমেদ বলেন, “তখন কোন রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা থাকতো না, আমরা পুরো টিম সংলাপ মুখস্ত করতাম। এজন্য নাটকের মান ভালো হতো।”
দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় চ্যানেল বিটিভি’র এগিয়ে চলাকে সুদৃঢ় করতে নিজেদের ঐকান্তিক আন্তরিকতার কথা জানান এসময়ের কর্তাব্যক্তিরা।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহা পরিচালক আবদুর মান্নান বলেন, “বিটিভির যে প্রশাসন তদারকি করার কেউ ছিলেন না বিগত পঞ্চাশ বছরে, একটি রাষ্ট্রীয় টিভি হিসেবে যেভাবে দাঁড়ানোর কথা ছিল তা দাঁড়ায়নি।টেলিভিশনটিকে প্রত্যেকে নিজের মতো করে ব্যবহার করেছি। আমার প্রায় দু’বছর হতে চলেছে এখানে, আমি চেষ্টা করছি সে জায়গায় প্রতিষ্ঠানটিকে দাঁড়া করানো জন্যে। আমার পায়ে যদি শৃঙ্খল হাতে যদি শৃঙ্খল বেধে আমাকে বলা হলো সাঁতার কাটো এটি কি সম্ভব, না সম্ভব নয় “
রামেন্দু মজুমদার বলেন, “আমাদের সবার পরিচয় এই টেলিভিশনের মাধ্যমে।গত পঞ্চাশ বছরে টেলিভিশন একটুকুও অগ্রগামী হয়নি আরো নিম্নগামী হয়েছে। একটি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন কি এভাবেই চলবে?”
সাবেক মহা পরিচালক ম হামিদ বলেন, “বাংলাদেশ টেলিভিশনের মান খারাপ হলেও সমগ্র দেশের চিত্র এখানে ফুটে উঠে।”
অভিনেতা আমজাদ হোসেন বলেন, “এখন এতো বেসরকারী টেলিভিশন কিন্তু আগের মতো কি ভালো মানের কিছু হয়।”
গুণীজনরা আরো বলেন, “আমরা কখনোই বাংলাদেশ টেলিভিশনের অবদানকে ছোট করে দেখি না।”
গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে পাথেয় করে বিটিভি আগামী দিনগুলোতে জনগণের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবে, প্রত্যাশা আনন্দ আয়োজনে শরিক অভ্যাগত গুণীজনদের।