বাগেরহাটের রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধীতাকারীরা বিশেষ একটি দেশের হয়ে বিশেষ উদ্দেশ্যে নেতিবাচক প্রচারণায় মেতেছে বলে মনে করেন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও প্রবাসী ব্লগার মাহমুদুল হক মুন্সী।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন,‘দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় আড়াইশো মেগাওয়াটের একটি কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে, তার আশেপাশে পরিবেশের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বা হচ্ছে সেটা কেউ খতিয়ে দেখেছেন কি? দেখেননি। অনেকে জানেনই না বাংলাদেশে আর কোন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে কিনা।
বৌ জিজ্ঞাসা করলো, আসলে রামপাল হলে কি সুন্দরবন ধংস হয়ে যাবে? উনার বাড়ি যমুনাপাড়ে, তাই জিজ্ঞাসা করলাম বঙ্গবন্ধু সেতু হবার পর যমুনার কি ক্ষতি হয়নি? তিনি বললেন, হয়েছে। নদীর নাব্যতা কমেছে, চর পড়েছে।
বললাম, দেখো, মনুষ্যসৃষ্ট যে কোন কিছুই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। একটা বাড়ি বানাতে যাও, তোমাকে জমি বের করবার জন্য গাছ কাটতে হবে। বিল্ডিং এর কাঠামো তৈরীতে কাঠের ব্যবহারের জন্য গাছ কাটতে হবে। দরজা, জানালা, ফার্নিচার…
যেকোন আধুনিকায়ন বা উন্নয়নে পরিবেশের ক্ষতি হয়। তবে ভালো উন্নয়নের শর্ত হলো কতটা ক্ষতি কমিয়ে করা যায়।
আমি জার্মানির যে গ্রামটাতে থাকি, সেটা লোকালয়ের শেষ সীমানা। এখান থেকে শুরু হয়েছে জার্মানির ১৫টি ন্যাশনাল রিজার্ভ ফরেস্টের একটি। গ্রাম থেকে দাঁড়িয়ে ৩/৪ কিলোমিটার দূরে তাকালে একটি সাদা পাহাড় দেখা যায়।
জিজ্ঞাসা করে জেনেছি পাহাড়টি মূলত ওপেন পিট সিস্টেমে কয়লা তোলার জন্য যে মাটি সরাতে হয় সে মাটির তৈরী। আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম। জার্মানির মতো একটি সভ্য দেশে ন্যাশনাল রিজার্ভ ফরেস্টের এতো কাছে একটি অসভ্য কয়লা খনি মুখ ব্যাদান করে দাঁড়িয়ে আছে, এদেশে কি একটা আনু মোহম্মদ নাই?
গতকাল চুক্তি সাক্ষরিত হয়ে গেলো বাংলাদেশের সর্ববৃহত কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্রের। মহেশখালী দ্বীপের মাতারিবাড়ি নামক স্থানে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুত কেন্দ্রটি স্থাপিত হতে যাচ্ছে’। আপনি নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন এর কথা আপনি শুনেনই নাই। কেন? তাহলে কি সমুদ্রের পানি দূষিত হবে না? মহেশখালীর দেড় লাখ মৎস্যজীবি কি মাছের অভাবে না খেয়ে মরবে না? দ্বীপটি কি বিরানভূমি হবে না?
সবই হবে, শুধু সেখানে চীনবান্ধব মালয়েশিয়া সরকারের সংশ্লিষ্টতা আছে যে! তাই এ ব্যাপারে টুশব্দ করা যাবে না।
এদেশীয় চৈনিক দালালদের উদ্দেশ্যই চীনের স্বার্থ রক্ষা করা। তাই আপনি শুধু রামপালের বিরুদ্ধে ব্যাঘ্র হুংকারই শুনে যাবেন, মাতারিবাড়ির নামটাও জানবেন না।