লোলা, ৫৭০০ বছর আগের এক নারী। থাকতেন ডেনমার্কে। চোখ ছিল নীল, গায়ের রঙ শ্যামলা, চুল কালো। নব্যপ্রস্তর যুগের এই নারীর খাওয়া শেষ খাবার ছিল হ্যাজেলনাট এবং হাঁসের মাংস। দুধের তৈরি খাবার পেটে সইতো না। মাড়ির অসুখ ছিল তার।
ভাবছেন এত কিছু কীভাবে জানা গেল? এত কিছু জানিয়েছে ছোট্ট এক টুকরা ‘বার্চ পিচ’ নামের চুইংগাম সদৃশ বস্তু। বার্চ গাছের ছাল থেকে তৈরি এই বস্তুটি প্রাচীন যুগে খাওয়া হতো চুইংগামের মতো করে।
প্রত্নতত্ত্ববিদ টম জরক্লান্ট কল্পনা করে এঁকেছেন সেই নারীর ছবি। তিনিই নাম দিয়েছেন ‘লোলা’।
নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটি। কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হ্যানস শ্রোয়েডার এই গবেষণাটি করেছেন। হাড় ছাড়া অন্য কোনো বস্তু থেকে মানুষের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল সম্পর্কে সফলভাবে জানা গেছে এই প্রথম।
তিনি জানিয়েছেন ছোট্ট এই টুকরোটি থেকে জানা গেছে সেই সময়ের রোগবালাই সম্পর্কে অনেক তথ্য। শুধু অতীত নয়, ভবিষ্যতে মানুষের শরীরে কোন ধরণের জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে, সেই সম্পর্কেও আঁচ করা গেছে অনেককিছু।
৭৬০০০০ বছর আগে থেকেই বার্চ গাছের ছালের কষ ব্যবহার করা হতো আঠা হিসেবে। গাছের ছাল গরম করে তৈরি করা হতো এই বস্তু। কেউ কেউ এই বস্তুটি চুইংগামের মতো চিবিয়ে খেতেন। উদ্ধার করা এই ‘বার্চ পিচ’-এও ছিল দাঁতের ছাপ।
কালচে বাদামি ‘বার্চ পিচ’ এর টুকরাটি প্রত্নতত্ত্ববিদরা উদ্ধার করেছেন ডেনমার্কের লল্যান্ডের একটি মিউজিয়াম থেকে। আর সেখান ডিএনএ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করেই জানা গেছে এত তথ্য। -সিএনএন