শনিবার রাতেই মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সুরকার, সংগীত পরিচালক, ও সংগীতশিল্পী আজাদ রহমান।
তাঁর পরিবারসূত্রে জানা গেছে, বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছৈ আজাদ রহমানের। গ্রিন রোডের বাড়ির সামনে জানাজা শেষে শনিবার রাত ৯টার পর নিয়ে যাওয়া হয় আজিমপুর গোরস্থানে। এই সংগীতজ্ঞের ইচ্ছানুযায়ি মায়ের কবরেই দাফন সম্পন্ন হয় তাঁর।
এরআগে শনিবার সাড়ে চারটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আজাদ রহমান। পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, দীর্ঘদিন ধরেই হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন আজাদ রহমান। শুক্রবার (১৫ মে) অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে (শ্যামলী) ভর্তি করানো হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বরেণ্য শিল্পী।
চ্যানেল আই পরিবারের সাথে আত্মিক সম্পর্ক ছিলো সংঙ্গীতজ্ঞ আজাদ রহমানের। তাঁকে হারিয়ে শোকার্ত পুরো চ্যানেল আই পরিবার।
বাংলাদেশে বাংলা খেয়ালের জনক বলা হয় তাঁকে। তাঁর উদ্যোগ আর আয়োজনেই প্রতি বছর চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে বসে বাংলা খেয়াল উৎসবের। সর্বশেষ গেল ফেব্রুয়ারিতে রাতভর ৭তম বারের মতো এই উৎসব চলে। বাংলা খেয়াল নিয়ে সেসময় আরো বিস্তর পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।
ষাটের দশকের শুরুতে কলকাতার ‘মিস প্রিয়ংবদা’ চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে আসেন আজাদ রহমান। সেই চলচ্চিত্রে তার সুরে কণ্ঠ দেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখার্জি ও প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কিংবদন্তি শিল্পীরা।বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তার সুরকৃত প্রথম চলচ্চিত্র বাবুল চৌধুরীর আগন্তুক।
তাঁর সুর ও নিজের কণ্ঠে গাওয়া ‘ভালবাসার মূল্য কত’, ডুমুরের ফুল চলচ্চিত্রের ‘কারো মনে ভক্তি মায়ে’, দস্যু বনহুর চলচ্চিত্রের ‘ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়’ গানগুলো সত্তরের দশকে জনপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনার পাশাপাশি ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো’-এর মত কালজয়ী দেশাত্মবোধক গানের সুর করেছিলেন।