চট্টগ্রামে চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনার’ মামলায় স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত বহাল রেখেছেন ।
মিতুকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে আজ ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন আদালত।
আজ আদালতে মিতুর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আইনজীবী জাহিদ সরোয়ার কাজল।
আজকের ‘নো অর্ডার’ আদেশের ফলে মিতুর জামিন বহাল রইল বলে জানান আইনজীবী জাহিদ সরোয়ার কাজল।
এই মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়: ৩২ বছর বয়সী আকাশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী মিতু কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস শেষ করে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ইন্টার্ন করেন। সেখানেই আকাশের সঙ্গে তার পরিচয়, ২০১৬ সালে বিয়ে।
বিয়ের পরপরই উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চলে গিয়েছিলেন মিতু। সেখান থেকে ১৩ জানুয়ারি দেশে ফেরেন তিনি। তার দুই সপ্তাহের মাথায় গত ৩১ জানুয়ারি ভোরে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসায় ইনজেকশনের মাধ্যমে নিজের শরীরে বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা করেন আকাশ।
আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক’ ও ‘প্রতারণার’ অভিযোগ করে যান। এর ‘প্রমাণ’ হিসেবে মিতুর সঙ্গে তার ‘বন্ধুদের’ বেশ কিছু ছবিও তিনি ফেসবুকে দিয়ে যান আকাশ।
এরপর পুলিশ এক আত্মীয়র বাসা থেকে মিতুকে আটক করে। আকাশের মা জোবেদা খানম ওইদিনই বন্দরনগরীর চান্দগাঁও থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।
দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় করা ওই মামলায় মিতু, তার মা শামীম শেলী, বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, ছোট বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা, যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা প্যাটেল ও ডা. মাহবুবুল আলমকে আসামি করা হয়।
এরপর চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম খায়রুল আমিনের আদালতে মিতুকে হাজির করা হলে বিচারক জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করে মিতু। এরপর মিতুর জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে মিতুকে জামিন দেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।