চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

চায়ের দোকানি থেকে জাতীয় অ্যাথলেট

ম্যারাথনকে বয়সের ফ্রেমে বেঁধে রাখা যায় না। ইচ্ছে থাকলেই যে কোন বয়সেই ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করা যায়। মাস্টার অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশীপে ১০০ বছরেও অংশগ্রহণ করা যায় বলে মনে করেন ৪৫ বছর বয়সের নারী অ্যাথলেট কালাইমনি।

কালাইমনি তার নিজ শহরের একটি চায়ের দোকান চালান। দোকানের পাশাপাশি নিজের স্বপ্ন ছুঁতেই নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তার দল ‘ফনিক্স রার্নাস’ নিয়ে ২১ কিলোমিটারের ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেছে। স্বপ্ন এখন ৪১ কিলোমিটার মাইলফলক স্পর্শ করার।

৪১ কিলোমিটার ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করতে প্রতি রোববার ২১ কিলোমিটার দৌড়ের অনুশীলন করে যাচ্ছেন তিনি।

কালাইমনি বলেন, ‘আমি ৪১ কিলোমিটার ম্যারাথন চার ঘণ্টায় শেষ করতে চাই।’

এর আগে জাতীয় এবং প্রদেশ ভিত্তিক মাস্টার অ্যাথলেটিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চারটি গোল্ড মেডেল জিতেছেন কালাইমনি। ২০১৭ সালে জেলা পর্যায়ে ৪০০মিটার এবং ৮০০ মিটার স্প্রিটিং ’এ অংশগ্রহণ করে জিতেছেন তিনটি গোল্ড মেডেল। জাতীয় পর্যায়ে ৮০০ মিটারে অংশগ্রহণ করে ২০১৪ সালে জিতে নেন সোনার মেডেল। জাতীয় পর্যায়ে ১৫০০ মিটার প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অর্জন করে। ৪১ কিলোমিটার মাইলফলক স্পর্শ করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই নারী অ্যাথলেটস।

ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়ালেখা করা কালাইমনি স্কুল জীবনে কাবাডি এবং অ্যাথলেটস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন। মাত্র বিশ বছর বয়সে তার বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পর স্বামীকে তার ইচ্ছের কথা জানালে তাতে রাজি হন সে। বিয়ের পর ঘর সামলানোর পাশাপাশি চলে স্বামীর চায়ের দোকানে সাহায্য করার কাজ।  তেলেগু শহরের রাস্তার পাশের চায়ের দোকানের প্রধান কারিগর তিনি। আজ থেকে দশ বছর আগে তার স্বামী প্রথম জানতে পারেন মাস্টার অ্যাথলেটিক প্রতিযোগিতার কথা।

‘নারী অ্যাথলেটস কালাইমনি বলেন, আমি কখনো এসব বিষয়ে প্রস্তুত ছিলাম না, সবার সামনে দৌড়ানোর অভ্যাস ছিলো না। তেলেগু কোচ যোসেপ আমাকে ফিট করে তৈরি করেছে। সেখান থেকেই জেলা, প্রদেশ, এবং সমগ্র ভারতব্যাপী লড়াই করার সাহস পেয়েছি। এখন স্বপ্ন দেখছি মাস্টার ইভেন্টে অংশগ্রহণ করার।

তাদের ঘরে তিন সন্তান।  বড় ছেলে প্রভুর বয়স ২৪ আর ছোট ছেলে প্রভাকরণের বয়স ২১।  তারা দুজনেই স্কুল ভ্যান ড্রাইভার। আর একমাত্র মেয়ে প্রিয়াঙ্কা (২১) বিএসসিতে পড়ছে।

আমি ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করতে খুব আগ্রহে আছি।  আমি প্রতিদিন সকাল ৪ টায় ওঠে পাঁচটায় পরিবারের জন্য নাস্তা বানানোর পাশাপাশি স্বামীর দোকানের যোগান দিয়ে আমি আমার অনুশীলনে যাই।  এভাবেই পরিশ্রম করছি শুধু জাতীয় প্রতিযোগিতায় মাস্টার ম্যারাথনে অংশগ্রহনের জন্য।