চাল আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে তা ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। দুই-তিন দিন আগে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়। সম্প্রতি হাওরে সৃষ্ট বন্যার কারণে যাতে কোনো ভাবেই চালের বাজারে দামে প্রভাব না পড়ে, সেজন্য আগাম এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রনালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের মধ্যে হাওরের সাম্প্রতিক বন্যা নিয়ে আলোচনা হয়। বন্যায় ফসলাদি নষ্ট হওয়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে কি না, কী পরিমাণ খাদ্য মজুদ রয়েছে, সংকট দেখা দিলে মজুদকৃত খাদ্য দিয়ে তা পূরণ করা যাবে কিনা, সংকট মোকাবেলায় বিদেশ থেকে চাল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক কমানো যায় কিনা- এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আলোচনার পর চাল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দেয় খাদ্য অধিদপ্তর। কত শতাংশ কমানো যায় সে বিষয়ে লিখিত প্রস্তাবনা পাঠাতে বলেছে খাদ্য মন্ত্রনালয়।
নির্দেশনা অনুযায়ী গত চাল আমদানিতে বর্তমানে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে তা ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব পাঠায় খাদ্য অধিদপ্তর।
যুক্তি হিসেবে প্রস্তাবে বলা হয়, চালের আমদানি শুল্ক কমালে আমদানিকারকরা চাল কিনতে এগিয়ে আসবে। এতে দেশে কৃত্রিম খাদ্য সংকট তৈরির সুযোগ পাবে না কেউ। ফলে বাজারে চালের দামে প্রভাব পড়বে না।
খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যথেষ্ট খাদ্য মজুদ রয়েছে। হাওরে যে পরিমান ফসল নষ্ট হয়েছে তাতে চালের বাজারে তেমন প্রভাব পড়বে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। প্রয়োজনে সরকারি উদ্যোগে খাদ্য আমদানির ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা চ্যানেল আই অনলাইনেক বলেন, কোনোভাবেই খাদ্য সংকট দেখা দেবে না। চালের বাজারে নেতিবাচক প্রভাবও পড়বে না। কারণ আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। দরকার হলে সরকারি উদ্যোগে চাল কেনা হবে-এ ধরনের সিদ্ধান্তও নিয়ে রাখা হয়েছে।
যুক্তি তুলে ধরে একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকার প্রতি বছরই চাল কেনে। এই চাল ওই বছরেই সাধারণত শেষ করা হয়। কারণ পরবর্তী বছরে তো আবারও কৃষকদের কাছ থেকে চাল কিনতে হবে। মজুদ রাখলে তা নষ্ট হয়ে যায়। অতএব যদি সংকট দেখা দেয়, তাহলে মজুদকৃত খাদ্য দিয়ে তা সহজেই সামাল দেয়া যাবে। এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নাই।
হাওরে যে পরিমান ফসল নষ্ট হয়েছে তা মোকাবেলা করার মত যথেষ্ট মজুদ রয়েছে বলেও জানান তারা।