বাজারে চালের দাম কমাতে চালের মিলে নিয়মিত মনিটরিং বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা বলছে, মনিটরিং আরো জোরদার করলে অল্প সময়ে চালের দাম আগের দামে নেমে আসবে। কারণ মিল মালিকরা গুদামে পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্তেও চাল সরবরাহ করছে না। অতিরিক্ত দামের আশায় তারা মজুদ রাখে।
পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে, এই তথ্য জানা গেছে।
চাল ব্যবসায়ীরা বলছে, সম্প্রতি সরকার বিভিন্ন চালের মিলে অভিযান চালিয়েছে, জরিমানা করেছে ও মিল মালিকদের সাথে বৈঠক করেছে। এরপর থেকে মিল মালিকরা নিয়মিত চাল সরবরাহ করছে। তার আগে যোগাযোগ করা হলে তারা চাল নাই বলে জানাতো। তখন চাল থাকার পরও তা বিক্রি করতো না। এখন নমনীয় ব্যবহার করছে। চালও বিক্রি করছে। এ কারণে গত কয়েকদিন ধরে চালের দাম কিছুটা কমছে।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও কাঠালবাগান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা ও পারিজা চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৬-৪৭ টাকায়, বিআর-২৮ ৫২-৫৫ টাকা, নাজিরশাইল (ভাল মানের) ৬২-৬৫ টাকা, নাজিরশাইল (সাধারণ) ৫৫-৫৭, পারি ৪৮-৫০ টাকা, পাইজাম ৫০-৫৪ টাকা, মিনিকেট কেজি প্রতি (ভালো মানের) ৫৮-৬২ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৫-৫৬ টাকা, বাসমতি ৬৪-৬৬ টাকা, কাটারিভোগ ৭৪-৭৬ টাকা এবং পোলাও চাল মানভেদে ৮০-৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের পাইকার হাজী ইসমাইল অ্যান্ড সন্সের বিক্রেতা জসিম উদ্দিন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, কয়েকদিন আগে সরকার যে অভিযান করেছে চালের মিলে তাতে অনেকটা উপকার হয়েছে।
তিনি বলেন, এতদিন চাল পাঠাতে বললে, তারা বলতো ধানের সরবরাহ কমে গেছে, চালের সংকট। কিনতে এখন সেসব কথা বলে না। অর্ডার দিলে চাল পাঠিয়ে দেয়। অতএব চালের মিলে নিয়মিত মনিটরিং করা উচিত।
প্রায় একই কথা জানান বাদশা রাইস এজেন্সি ও বরিশাল রাইস এজন্সিসহ কয়েকটি পাইকারী চাল বিক্রয়কারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত কর্মচারিরা। তারা বলেন, চালের দাম যে হারে বেড়েছে ঠিক সেই হারে কমানো সম্ভব। সরকার চাল কলে তদারকি বাড়ালেই চালের দাম কমে যাবে। দাম কমুক তা ব্যবসায়ীরাও চায়। কারণ ক্রেতারা চাল কিনতে এসে বিভিন্ন ধরনের অভিযো করে।
চালের দাম নিয়ে ঝামেলা এড়াতে কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ীরা দোকানে চালের তালিকা ও দাম প্রদর্শন করছে। তবে তালিকায় থাকা দাম দুই -একদিন পর পর ওঠানামা করে। এছাড়া দরকষাকষির মাধ্যমে চাল বিক্রি করা হয়। তাই প্রদর্শিত দামের তালিকায় দাম কমবেশি হতে পারে বলে জানালেন তারা।
তবে বাজারে ওএমএসের চালের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, আতপ চাল অনেকে পছন্দ করে না। সবাই সিদ্ধ চালই কিনে নেয়। তাই বাজারে আমদানি করা আতপ চালের তেমন প্রভাব পড়েনি।
বর্তমানে চালের মজুদও কম, যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দৈনিক খাদ্যশস্য পরিস্থিতির সর্বশেষ হালনাগদ তথ্য অনুযায়ী, ২৭ সেপ্টেমর পর্যন্ত চালের মজুদ রয়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭৩০ টন। তবে তা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় অর্ধেক। গত বছর এই সময়ে চালের মজুদ ছিল ৭ লাখ ৬০ হাজার ৩০ টন।