বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী সুপ্রভাত পরিবহনের বাসের চাপায় নিহতের ঘটনার কিছুক্ষণ আগে শাহজাদপুর এলাকায় ওই বাসটি বেপরোয়া গতিতে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে চাপা দিয়ে গুরুতর জখম করে। এরপর বাসের যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে চালক সিরাজুল ইসলামকে আটক করে ট্রাফিক পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
ওই সময় উপস্থিত জনতা বাস ভাংচুর চালাতে পারে এমন আশঙ্কায় মালিকের নির্দেশে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়েন কনডাক্টর ইয়াছিন আরাফাত। বাস নিয়ে দ্রুত পালাতে গিয়ে নর্দ্দা পার হতেই প্রগতি স্বরণির বসুন্ধরা গেইটের বিপরীত পাশে শিক্ষার্থী আবরার আহমেদকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরারের প্রাণ যায়।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে আগের গ্রেপ্তার সিরাজুলকে জিজ্ঞাসাবাদে আসল তথ্য বেরিয়ে আসে।
মঙ্গলবার রাতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আবরারকে চাপা দেওয়ার সময় চালকের আসনে থাকা হেলপার ইয়াছিন আরাফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার সকালে রাজধানীর মধ্যবাড্ডা এলাকা থেকে হেলপার ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন।
তিনি বলেন, গত ১৯ মার্চ ভোরে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকা থেকে ভোর পৌনে ছয়টার দিকে গন্তব্যে রওনা দেয় সুপ্রভাত পরিবহনের বাসটি (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৪১৩৫) রাজধানীর শাহজাদপুরের বাঁশতলা এলাকায় মিরপুর আইডিয়াল গার্লস ল্যাবরেটরী কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সিনথিয়া সুলতানাকে চাপা দিয়ে গুরুতর জখম করে। এরপর বাসের যাত্রীরা চালক সিরাজুলকে আটক করে ট্রাফিক পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
ইয়াছিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আব্দুল বাতেন বলেন: এ সময় উপস্থিত জনতা বাসের ক্ষতি করতে পারবে এমন আশঙ্কায় বাস মালিক ননী গোপালের নির্দেশে ড্রাইভিং সিটে বসেন কনডাক্টর ইয়াছিন। কোনধরনের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা স্বত্ত্বেও বাস নিয়ে দ্রুত পালানোর সময় নর্দ্দা এলাকা পার হতেই বিইউপি শিক্ষার্থী আবরারকে চাপা দিয়ে হত্যা করে।
হত্যার পর ইয়াছিন বাসটি রেখে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে মঙ্গলবার রাতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি এলাকার একটি ইটের ভাটা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সকালে মধ্যবাড্ডা থেকে বাসের হেলপার ইব্রাহিমকে প্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ইয়াছিন প্রাথমিকভাবে বাসচাপা দিয়ে আবরারকে খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানান আব্দুল বাতেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, বাস মালিক ননী গোপাল ডিবির নজরদারীতে রয়েছে।