চলতি অর্থবছরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। যা সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ শতাংশ কম। এ বছর বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
গত বছর একই সময়ে ৮ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে জানিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। কিন্তু এবার তা ১ শতাংশ কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ বার্নাড হ্যাভেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মোট জিডিপি প্রবৃদ্ধির মধ্যে কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি হবে ৩ শতাংশ, যা গত অর্থবছর সরকারি হিসেবে হয়েছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
এছাড়া শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াবে ৯ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে ছিল ১৩ শতাংশ। সেবাখাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়াবে ৭ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য ফসলের উৎপাদন ক্ষতির অন্তর্ভুক্তির কারণে মুদ্রাস্ফীতি সামান্য বাড়বে।
এতে আরও বলা হয়, আর্থিক খাতে সংস্কার, অবকাঠামোগত ব্যবধান বন্ধ করা এবং বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন দেশের অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কলেজের স্নাতকদের মাত্র ১৯ শতাংশ পূর্ণকালীন বা খণ্ডকালীন কর্মরত এবং তৃতীয় স্তরের স্নাতকদের এক তৃতীয়াংশ স্নাতক হওয়ার এক বা দুই বছর পরে বেকার রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন বলেন, বাংলাদেশ ইতিবাচক গতিতে এগোচ্ছে। ২০০৭ সালে এসেছিলাম তখন বাংলাদেশ এ অবস্থায় ছিল না। বাংলাদেশ অনেক বিনিয়োগ করেছে। ধীরে ধীরে এর সুফল পাওয়া যাবে।
তবে উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বাংলাদেশকে মানসম্পন্ন চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানান তিনি।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ বার্নার্ড হ্যাভেন বলেন, শ্রমবাজারের সমীক্ষা বারবার দেখায় যে নিয়োগকর্তারা এই জাতীয় দক্ষ প্রযুক্তিবিদ এবং পরিচালকদের উচ্চ দক্ষতার পদ পূরণের জন্য লড়াই করছেন।
তিনি বলেন, চাহিদা ও সরবরাহের ব্যবধান দূর করতে দেশকে দক্ষতা প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ করতে হবে, মহিলা ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ন্যায্য প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে, বাজার সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক দক্ষতা বিকাশের জন্য সরকারি তহবিল ব্যবস্থা স্থাপন এবং কার্যকর একটি নিয়ন্ত্রণকারী এবং জবাবদিহিতার কাঠামো প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাজারে দুর্বলতা বিরাজ করছে। বিক্রয়মূল্য কমে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। যুক্তরাষ্ট্রে চায়নিজ শুল্ক বসানো হচ্ছে। ক্রেতারা এখন সস্তায় বাজার খুলছে। মূল্য প্রতিযোগিতায় আমাদের সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। বাজার সস্তা হয়ে যাচ্ছে। ভিয়েতনাম ও ভারতের সঙ্গে পেরে ওঠা যাচ্ছে না। এসব মোকাবেলা করাই এখন বড় চ্যালঞ্জ।