এতদিন শুধু ডিপ্লোমা কোর্স চালু থাকলেও এবার পূণার্ঙ্গ রূপ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট। ডিপ্লোমা কোর্স দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও, এবার প্রতিষ্ঠানটিতে স্নাতকোত্তর শিক্ষা চালু হতে যাচ্ছে। তাছাড়া স্নাতক কোর্স চালুর বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন।
বুধবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এর চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্মারক বক্তব্যে চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিক্ষক মানজারেহাসীন মুরাদ একথা জানান।
সকাল ১০টায় বেলুন উড়ানোর মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটির শেখ রাসেল মিলনায়তনে আমন্ত্রিত অতিথিরা আলোচনা সভায় অংশ নেন। আলোচনার শুরুতে উপস্থিত অতিথিদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘ইতোমধ্যে দেশের প্রায় সকল সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলচ্চিত্র ও গণমাধ্যম সংক্রান্ত বিষয়গুলো পড়ানো হচ্ছে। তাই তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে এই ইনস্টিটিউটকে সেভাবেই প্রস্তুত হতে হবে। আমরাও সেক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা প্রদান করে আসছি। প্রতিষ্ঠানটির জন্য নিজস্ব জমি, ভবনের নকশা, জনবল নিয়োগ সবই আমরা প্রায় চূড়ান্ত করেছি।’
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট বর্তমানে রাজধানীর দারুস সালামে অস্থায়ী ভবনে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি তথ্য সচিব এবং ইনস্টিটিউটের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মরতুজা আহমদ বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠান আসলে দীর্ঘদিনের আকাঙ্খা এবং আন্দোলনের ফসল। সরকার এবং তথ্য মন্ত্রণালয় শুরু থেকেই এই প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে দায়িত্বশীল। এই প্রতিষ্ঠানে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা হবে শীঘ্রই। এছাড়া বর্হিবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কোর্স কারিকুলামেও আসছে পরিবর্তন, সংশোধন এবং সংযোজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সাথেও আমাদের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। তাতে আমরা উভয়েই আরও সমৃদ্ধ হতে পারবো বলে মনে করছি।’
উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান, কোর্স পরিচালক মশিউদ্দিন শাকের, চলচ্চিত্র নিমার্তা শামীম আখতার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ, ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মীসহ আরও অনেকে।
এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, ‘চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মানুষ সত্য ও সুন্দরকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত হয়।’ বাঙ্গালি সংস্কৃতিকে তিনি আমাদের নাটক ও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
চলচ্চিত্র নির্মাতা শামীম আখতার নারী প্রশিক্ষণার্থীদের প্রণোদনা প্রদানের বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে আনার আহ্বান জানান। যাতে তারা এই পেশায় আসতে আগ্রহী হয়।
ম হামিদ বলেন, ‘আমরা মূলত চলচ্চিত্রের পেছনের লোকটিকে গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছি এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।’ এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যাদের ভূমিকা রয়েছে তাদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
আলোচনা শেষে প্রতিষ্ঠানটির প্রশিক্ষণার্থীদের নির্মিত কয়েকটি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রযোজনা প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মো. মনজুরুর রহমান।
ছবি: জাকির সবুজ