শিরোপার শেষ ধাপে যাওয়ার পথটা তৈরি করেই রেখেছিল বোলাররা। বাকি কাজটা সারতে তর সইলেন না নারিন-মইনরা। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের স্বপ্নভঙ্গ করে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠল দুইবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
মিরপুর শের-ই-বাংলায় নারিন-শহিদুলের দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথমে ১৪৮ রান তুলতে পারে বন্দর নগরীর দলটি। মাঝারি লক্ষ্য ১৬ বলের রেকর্ড ৫৭ রানের তাণ্ডবে সহজ করে দেন সুনিল নারিন। বাকি কাজটা ৭ উইকেট ও ৪৩ বল হাতে রেখেই সারেন দুই বিদেশি ডু প্লেসিস ও মইন আলী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স (১৪৮/১০); কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স (১২.৫ ওভারে ১৪৯/৩) ম্যাচ সেরা: সুনিল নারাইন (০/২৪ এবং ১৬ বলে ৫৭ রান)
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ২০১৫ সালের আসরে অভিষেক হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। বরিশালকে হারিয়ে সেবার প্রথম এবং ২০১৯ সালে ঢাকাকে হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপার স্বাদ নেয় দলটি। তৃতীয়বার শিরোপা তুলে ধরতে এবার লড়তে হবে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি একই মাঠে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় হবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ১৪৮ রান তাড়ায় কুমিল্লার শুরুটা হয়েছিল বেশ বাজে। প্রথম বলেই শরিফুল ইসলামের শিকার হন লিটন দাস। সে ওভারের তৃতীয় বলে ছয় মেরে ঝড় শুরু করেন ওপেনার নারিন। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মৃত্যুঞ্জয়ের শিকার হয়ে থামেন। তবে এর আগে ভাঙেন বিপিএলে শেহজাদের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। ১৬ বলের তাণ্ডবে পাঁচ চার ও ছয় ছক্কায় তোলেন ৫৭ রান।
নারাইনের রেকর্ডের দিনে রেকর্ড গড়েছে ফাইনালে ওঠা কুমিল্লাও। পাওয়ারপ্লে-তে ২ উইকেটে বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৮৪ রান তুলে ফেলেছে দলটি। এর আগে ২০১৯ সালে রংপুর রেঞ্জার্সের বিপক্ষে খুলনা টাইগার্স তুলেছিল ৮৩ রান।
নারিনের খুনে ইনিংসে মাঝারি লক্ষ্য আরও সহজ হয়ে যায় কুমিল্লার। সেখানে ১৩ বলে ৩০ রানের ঝড় তোলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার মইন আলি। প্রোটিয়া ক্রিকেটার ফাফ ডু প্লেসিসও কম যাননি। ২৩ বলে করেছেন মইনের সমান রান। মাঝে ২৪ বলে ২২ রান করেছেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস।
ব্যাটিংয়ে ভালো করা মেহেদি হাসান মিরাজ বোলিংয়ে পড়েছিলেন নারিনের তোপে। এক ওভার হাত ঘুরিয়ে চট্টগ্রামের স্পিনার খরচ করেন ২৩ রান। বোলারদের দুঃস্বপ্নের দিনে সবচেয়ে কম রান দেন বেনি হাওয়েল। ২ ওভারে ১১ রানে নেন ইমরুলের উইকেট।
এর আগে, টপ অর্ডারের ব্যর্থতা, মিডলের লড়াই এবং শেষে মৃত্যুঞ্জয়ের ক্যামিওতেও বড় সংগ্রহ পায়নি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ভিক্টোরিয়ান্স বোলারদের তোপে এক ওভার থাকতেই গুটিয়েছে আফিফ হোসেনের দল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন মিরাজ। শেষ দিকে মৃত্যুঞ্জয়ের ১৫ রানের সুবাদে দেড়শ ছুঁইছুই স্কোর পায় এলিমেনটর ম্যাচে খুলনাকে হারিয়ে আসা দলটি।
টস জিতে এদিন শুরুটা ভালোই করেছিল দুই ওপেনার উইল জ্যাক ও জাকির হাসান। ৩.৪ ওভারেই দুজন তুলে ফেলেছিল ৩১ রান। চট্টগ্রামের দারুণ শুরুর দিনে প্রথম আঘাতটা হানেন শহিদুল ইসলাম। ইমরুলের ক্যাচ বানিয়ে জ্যাককে (২০ রান) ফেরান কুমিল্লার পেসার। পরে চ্যাডিউইক ওয়ালটন ফেরেন চট্টগ্রাম সমর্থকদের হতাশ করে।
৩১ রানে এক উইকেট হারানো দল পরের ২০ রান তুলতে হারায় আরও চার ব্যাটারকে। ব্যর্থ হন অধিনায়ক আফিফ, শামিম ও হাওয়েল। আসা-যাওয়ার দিনে ৩৮ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে রানের চাকা সচল রাখেন মেহেদি হাসান মিরাজ। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক আকবর আলী খেলেন ২০ বলে ৩৩ রানের ক্যামিও।
চট্টগ্রামকে অল আউট করার দিনে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন মইন আলী ও শহিদুল ইসলাম। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও আবু হায়দার।