চকবাজারে আগুনের ঘটনার পরপরই নিখোঁজ থাকা দুই বান্ধবীর একজনের মরদেহ আগেই শনাক্ত করা হয়েছিল, ডিএনএ প্রোফাইল মিলিয়ে আরেকজনের মরদেহও শনাক্ত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সব মিলিয়ে আরও পাঁচটি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছে তারা।
নতুন শনাক্ত ৫ মরদেহের মধ্যে রয়েছে সংস্কৃতিকর্মী রেহনুমা তাবাসসুম দোলার মরদেহ।
দুই বান্ধবীর মধ্যে ফাতেমাতুজ জোহরা বৃষ্টির মরদেহ আগেই শনাক্ত হয়েছিল, আর আজ শনাক্ত হলো রেহনুমা তাবাসসুম দোলার মরদেহ। দুই বান্ধবী অগ্নিকাণ্ডের দিন রিকশা করে শিল্পকলা একাডেমি থেকে ফিরছিল।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের ডিএনএ প্রোফাইলের মিল না পাওয়ায় আরও তিনটি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন সিআইডি প্রধান শেখ হিমায়েত হোসেন।
এর আগে গত ৬ মার্চ নিহত অজ্ঞাতদের মধ্য থেকে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ১১টি মরদেহ সিআইডি শনাক্ত করে। এদের মধ্যে ৮ জনের পরিচয় নিশ্চিত করে ওইদিনই সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন। ওই ৮ জনের মধ্যে দোলার বান্ধবী গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতেমাতুজ জোহরা বৃষ্টির মরদেহ ছিল। পরিচয় শনাক্ত হওয়া আরও তিন জনের মরদেহ পরদিন স্বজনদের কাছে তুলে দেয়া হয়।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ঘটনার দিনই আগুনে পুড়ে অন্তত ৬৭ জন নিহত হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আরও চারজন। এ নিয়ে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়ায় ৭১ জন।
এলাকাবাসী জানায়, ওই ভবনের কারখানা থেকে আগুন ছড়িয়েছে। কেউ বলছে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ আবার কেউ বলছে বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়ায়। ওয়াহিদ ম্যানশনের নিচতলায় প্লাস্টিকের গোডাউন ছিল। ওপরে ছিল পারফিউমের গোডাউন। পুড়েছে অন্তত পাঁচটি বাড়ি।
প্রায় ১১ ঘণ্টা পর চকবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর আগুন কিছু নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও পরে আবার আগুন লাগে। ড্যাম্পিং শুরু করার পর ভবনের পেছন দিকে সেই আগুনের শুরু হয়। তা নিয়ন্ত্রণে আনতে ভোর ছয়টা বেজে যায়।