চকবাজার ট্র্যাজেডিতে নিহত অজ্ঞাত ১৯টি মরদেহের ১৪টির পরিচয় শনাক্তে ১৫ দিন এবং বাকি ৫টি মরদেহের পরিচয় শনাক্তে ৩ সপ্তাহের বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
এখন পর্যন্ত ১৯ মরদেহের পরিচয় শনাক্তে ২৩ দাবিদার ও ৩৮ নিকটস্বজনের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাব। ওই ১৪টি মরদেহের ডিএনএ নমুনা হিসেবে রক্ত ও সফট টিসু নেয়াতে সময় কম লাগবে, আর ৫টি মরদেহ পুড়ে অঙ্গার হওয়াতে হাড় ডিএনএ নমুনা হিসেবে নেয়ায় পরীক্ষায় সময় বেশি লাগবে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডি অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার।
অগ্নিকাণ্ড স্থলের বিষয়ে সিআইডি কোন পরীক্ষা করবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের মহাখালীতে কেমিক্যাল ল্যাব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত দফতর ফায়ার সার্ভিস যদি আমাদের সহায়তা চায় তাহলে সেসব স্যাম্পল পরীক্ষায়ও সহায়তা করা হবে।
পরে যদি কোনো পরিবার লাশের দাবি জানায় সেই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৬৭ টি মরদেহের স্যাম্পলই আমাদের কাছে রয়েছে এবং এটা যুগ যুগ ধরে সংরক্ষিত থাকবে। কোন পরিবার যদি পরবর্তিতে দাবি জানায় তাহলে তখন পরীক্ষা করা হবে, তবে এই চ্যালেঞ্জের বিষয়টি অবশ্যই আদালতের মধ্য দিয়ে আসতে হবে।
এর আগে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রুমানা আক্তার বলেন, চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিচয় সনাক্তে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ শুরু করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে ৬৭ টি মৃতদেহ থেকে ২৫৬ টি (রক্ত, টিস্যু, হাড় ও বাক্কাল সোয়াব) ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি একটি বিচ্ছিন্ন পৃথক হাতকে পৃথক আলামত হিসেবে গণ্য করে সেটি থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর ফলে মোট সংগৃহীত নমুনার পরিমাণ দাঁড়ায় ২৫৭টি।
২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢামেকে স্থাপিত অস্থায়ী বুথের মাধ্যমে লাশের দাবিদারদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়। সর্বশেষ ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩৮ জন নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে ৩৮টি রেফারেন্স নমুনা সংগ্রহ করে। অশনাক্তদের পরিচয় নিশ্চিত হতে সিআইডির ফরেনসিক টিম ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছে। সিআইডির ডিএনএ ল্যাব টিম সর্বোচ্চ দ্রুততার সঙ্গে ডিএনএ পরীক্ষা করে অশনাক্তদের পরিচয় শনাক্তের কাজ শেষ করবে।
গত বুধবার রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, ওই ভবনের কারখানা থেকে আগুন ছড়িয়েছে। কেউ বলছে বৈদ্যুতিক টান্সফরমার বিস্ফোরণ আবার কেউ বলছে বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়ায়। ওয়াহিদ ম্যানসনের নিচতলায় প্লাস্টিকের গোডাউন ছিল। ওপরে ছিল পারফিউমের গোডাউন।