ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রংপুরের পীরগঞ্জে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে সহিংসতার শিকার সংখ্যালঘু পরিবারগুলো। দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলায় পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো আবারও তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা। সংখ্যালঘু বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুই মামলায় এ পর্যন্ত ৫৪ জন গ্রেফতার হয়েছে।
রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানিয়েছেন, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের উদ্যোগে প্রত্যেক পরিবার পেয়েছে লক্ষাধিক টাকা, ঘর নির্মাণের সরঞ্জামসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা।
রোববার পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়ার পরিতোষ সরকার নামে এক যুবক ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবি পোস্ট করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর থেকে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ধর্ম অবমাননার মামলায় অভিযুক্ত পরিতোষ সরকার তার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওইদিন বাদ মাগরিব এলাকায় মসজিদের মাইকে মাইকিং করে লোক জমায়েত করা হয়। এরপর পরিতোষের বাড়ি ঘেরাও করলে রাত সাড়ে ৮টায় পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তা প্রতিরোধ করে।
রাত ১০টায় দূর্বৃত্তরা বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে পার্শ্ববর্তী বড় করিমপুর, কসবা ও উত্তরপাড়া গ্রামে সংখ্যালঘু ২৮টি বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।
এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানায় দুটি মামলা হয়েছে। সহিংসতা মামলায় ৪৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৫’শ জনকে। এর মধ্যে ৫৪ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার ৩৮ জনের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
জাতীয় সংসদের স্পিকার, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী, ত্রাণ ও দূর্যোগ প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।