জরিপে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একদিন আগেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, রাজধানী ঢাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৬৯ শতাংশের শরীরে নতুন ধরন ওমিক্রনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যা কয়েকদিন আগেও ছিল ১৩ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধির পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে চলার আহ্বান জানান। না হলে অবস্থা খুবই ভয়াবহ হতে পারে বলেও সাবধান করে দেন তিনি।
এর ঠিক পরেরদিনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করা এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধিতে ডেল্টা ধরনের বড় প্রভাবও থাকলেও নতুন আক্রান্তদের ২০ শতাংশই ওমিক্রনে সংক্রমিত। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন জেলার করোনা রোগীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
নতুন পাওয়া এসব তথ্য জানাতে মঙ্গলবার দুপুরে বিএসএমএমইউ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। ‘জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্ট’ এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ গবেষণা তথ্য-উপাত্তের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, এই গবেষণার উদ্দেশ্য কেভিড জিনোমের চরিত্র উন্মোচন, মিউটেশনের ধরন এবং বৈশ্বিক কোভিড-১৯ ভাইরাসের জিনোমের সঙ্গে এর আন্তঃসম্পর্ক বের করা।
বিএসএমএমইউ-এর চলমান গবেষণায় মূলত গত ৬ মাস ১৫ দিনের পাওয়া তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়েছে। আর তাতেই ওমিক্রন সম্পর্কে এমন উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। যদিও করোনার নতুন এ ধরনের খোঁজ পাওয়ার পরপরই সরকারের পক্ষ থেকে বারবার জনগণকে সচেতন করা হয়েছিল। কিন্তু জিম্বাবুয়ে থেকে ফেরা নারী ক্রিকেট দলের দুই সদস্য ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়া কিছুদিনের মধ্যেই আরও নতুন নতুন আক্রান্তের খবর পাওয়া যেতে থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী একাধিকবার ওমিক্রন নিয়ে মানুষকে সতর্ক করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতে যে কোনো লাভ হয়নি, দেশে ওমিক্রন পরিস্থিতির অবনতি সেটাই বলছে। গত কয়েকদিনে দ্রুততার সঙ্গে বেড়েছে করোনা শনাক্তের সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। আজকে সকাল ৮টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৪০৭ জন। শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আর মৃত্যু হয়েছে ১০ জন।
তার মানে দ্রুত পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। আমরা মনে করি, ওমিক্রন বা ডেল্টা- যে ধরনই হোক না কেন; সতর্ক থাকতেই হবে। না হলে অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে আমাদের।