আগামী সোমবারের মধ্যে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে (বিটিআরসি) ১ হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
এর আগে বিটিআরসি’কে ৩ মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা দিতে আপিল বিভাগের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে গ্রামীণফোনের করা রিভিউ আবেদনের শুনানি নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত গ্রামীণফোনকে বলেন, সোমবারের মধ্যে আগে বিটিআরসি’কে ১ হাজার কোটি টাকা দিয়ে আসুন এরপর ওইদিন পরবর্তী আদেশ দেয়া হবে।
আজ আদালতে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী। আর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
এদিকে বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে গেলে গতকাল বিটিআরসি তা ফিরিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে গ্রামীণফোন।
গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে গত বছর দাবি করে বিটিআরসি।
একপর্যায়ে বিটিআরসির দাবি করা টাকার অঙ্ক নিয়ে আপত্তি তুলে নিম্ন আদালতে একটি টাইটেল স্যুট (স্বত্ত্বের মামলা) মামলা করে গ্রামীণফোন। ওই মামলাটি আদালত গ্রহণ করে। ওই টাইটেল স্যুটের অধীনেই গ্রামীণফোন বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে, যা গত ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত খারিজ করে দেন।
নিম্ন আদালতের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন। সে আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে বিটিআরসি।
সে আপিলের শুনানি নিয়ে গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ ৩ মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া সাপেক্ষে গ্রামীণফোনের কাছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। তবে ২ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার আদেশটি বাস্তবায়ন না হলে এর আগে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশটি (ভ্যাকেট) বাতিল হয়ে যাবে বলে তখন জানিয়ে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
আপিল বিভাগের এই আদেশ পুনর্বিবেচনার চেয়ে গত ২৬ জানুয়ারি রিভিউ আবেদন করে গ্রামীণফোন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ আদেশ দিলেন সর্বোচ্চ আদালত।