টি-টুয়েন্টির বিস্ফোরক দুই ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে একাদশে টেনেও ভাগ্য ফেরাতে পারল না রংপুর রাইডার্স। টানা তিন হারে অনেকটা ব্যাকফুটে চলে গেল মাশরাফীর দল। শনিবার রাতের ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে ১৪ রানে হেরেছে তারা।
অন্যদিকে টানা চার জয় তুলে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল তামিম ইকবালের কুমিল্লা।
কুমিল্লার দেয়া ১৫৪ রানে টার্গেটে নেমে শূন্য রানে জীবন পান গেইল। হাসান আলীর বলে সহজ ক্যাচ ছাড়েন লিটন। পরের ৩ বলে টানা চার হাঁকিয়ে গেইল যেন বোঝাতে চান, ম্যাচটাই বুঝি ছেড়ে দিয়েছ!
তবে ক্রিকেটে শেষ বলে যে কিছু নেই সেটি প্রমাণের মঞ্চ হয়ে উঠল শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ২২ গজ। শেষ পর্যন্ত রংপুর করতে পেরেছে ৭ উইকেটে ১৩৯ রান। রবি বোপারা যা একটু লড়াই করেছেন। ৪৮ রান করে ছিলেন অপরাজিত। স্ট্রাইকরেট একশ পার করতে পারেননি কুমিল্লার দারুণ বোলিংয়ে।
মেহেদী হাসান ও রশিদ খানের দারুণ স্পিনের সামনে ৩২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে রংপুর। পঞ্চম উইকেটে জুটি গড়ে আশা দেখিয়েছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন ও বোপারা। ৯৯ রানে মিঠুনকে (৩১) ফিরিয়ে দেস আল-আমিন হোসেন, কক্ষপথের বাইরে চলে যায় রংপুর। শেষের লড়াইয়ের আগেই ম্যাচ হেরে বসে তারা।
গেইল-ম্যাককালামদের মঞ্চে নায়ক কুমিল্লার দুই স্পিনার। প্রথম ওভারেই মেহেদী হাসান পেয়ে যেতে পারতেন গেইলের উইকেট। আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে বঞ্চিত হন এই অফস্পিনার। পরিষ্কার এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচেন ক্যারিবীয় ব্যাটিংদানব। পরের ওভারে অল্পের জন্য ছুঁয়ে যায়নি ম্যাককালামের স্টাম্প।
সেই ম্যাককালামকে ফিরিয়েছেন মেহেদী, দারুণ এক ডেলিভারিতে বোকা বানিয়ে। রাইডার্সের ওপেনার ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলবেন বুঝতে পেরে মেহেদীর হাওয়ায় ভাসানো ডেলিভারি। ধরেই স্টাম্প উপড়ে দেন লিটন। স্টাম্পড। টি-টুয়েন্টিতে মেহেদীর প্রথম শিকার কিউই ব্যাটসম্যান।
এক বল পরেই শাহরিয়ার নাফীসকে বোল্ড করে মাতেন বাঁধনহারা উদযাপনে। আর তাতে ম্যাচটাও জমে ওঠে। আক্রমণাত্মক মেজাজ আর বৈচিত্র্যে বিপিএলের পঞ্চম আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই বাজিমাত করেন কুমিল্লার এই অফস্পিনার।
রংপুরের ইনিংসের কোমড় ভাঙেন রশিদ খান। ৪ ওভারে ১৯ রানে দুই উইকেট নেন আফগান লেগস্পিনার।
প্রায় ২০ হাজার দর্শকের উপস্থিতি ছিল রংপুর-কুমিল্লার লড়াইয়ে। আগে বাট করে কুমিল্লা ৬ উইকেটে ১৫৩ রান তোলায় মন খারাপ হচ্ছিল অনেকের। এ রানে কী আর গেইল-ম্যাককলামের পাওয়ার হিটিং দেখা যাবে! সেই রানই যে কুমিল্লার জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল, তা কে জানত!