রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই নানা ধরনের কূটচাল করে আসছিল মিয়ানমার। এক পর্যায়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নানা চাপে কিছুটা পিছু হটে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে সই করেছিল তারা। অবশ্য সেখানেও তারা টালবাহানা করেছিল। এবার তারা নতুন এক কূটচাল শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে মিয়ানমার সরকার দাবি করে, প্রথম রোহিঙ্গা পরিবারকে ফেরত নিয়েছে তারা। তারা বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করেও। তবে আসল ঘটনা ভিন্ন। তারা শূন্য রেখা থেকে এমন একটি পরিবারকে ফেরত নিয়েছে যারা রোহিঙ্গাদের কাছে ‘গুপ্তচর’ হিসেবে পরিচিত। নো-ম্যানস ল্যান্ড থেকে মিয়ানমারে ওই একটি পরিবারের ফেরত যাওয়া প্রত্যাবাসনের আওতায় পড়ে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম। একইসঙ্গে এটাকে মিয়ানমারের ‘কূটচাল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটি। ফিরে যাওয়া ওই পরিবার মিয়ানমারের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করত বলেও মাঝি হিসেবে পরিচিত রোহিঙ্গাদের নেতারাও অভিযোগ করেছেন। আমরা মনে করি, এমন অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করে দেখা দরকার। কারণ, এই অভিযোগ যদি সত্য হয়, তাহলে এটা অবশ্যই মিয়ানমারের ঘৃণ্য একটি কর্মকাণ্ড। বিশ্ববাসীর চাপ থেকে বাঁচতে নিজেদের লোককে এভাবে নিয়ে বিশ্ববাসীর সামনে নাটকের মহড়ার চেষ্টা না করে সত্যি সত্যি নিপীড়িত মানুষদের নিজের জন্মভূমিতে ফেরত নেওয়া দরকার। তবে মিয়ানমার খুব সহজে এটা করবে না বলেই অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়। এজন্য বাংলাদেশকে আরও কূটনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে হবে। তাদের এই ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরতে হবে। এজন্য তাদের অপপ্রচারের কঠোর জবাব এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে অতি দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আমরা আহ্বান জানাই।