গুগল, নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে বিশ্বের অন্যতম সফল এক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ছবি। ব্যবহারকারীদের জন্য একের পর এক সেবা চালু করে চমকে দিতে গুগলের জুড়ি নেই। তবে সবসময় যে গুগল সফল হয়েছে, এমনটা কিন্তু বলা যাবে না। গুগলের ব্যর্থ উদ্যোগের সংখ্যা কিন্তু একেবারেই কম নয়।
এমনই কিছু ব্যর্থ উদ্যোগের খবর থাকছে আজ-
১. গুগল রিডার: খবর পড়ার জন্য অ্যাপটি চালু করেছিল গুগল। তবে আশানুরূপ সাড়া পায়নি। ২০১৩ সালের মার্চে রিডার বন্ধের ঘোষণা দেয় গুগল। আনুষ্ঠানিকভাবে একই বছরের জুলাই মাসে সেবাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
২. গুগল হেলথ: স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সবার জন্য সহজলভ্য করতে গুগল এই সেবাটি চালু করেছিল। তবে গুগল যেমনটি ভেবেছিল, তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি এটি। আর তাই ২০১২ সালের জানুয়ারিতে গুগল হেলথ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
৩. গুগল নোটবুক: গুগল ডকের পূর্বসূরি বলা যেতে পারে গুগল নোটবুককে। এখানে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লিংক সংরক্ষণ করা, নোট লেখা এবং অন্যদের সাথে শেয়ার করার সুবিধা ছিল। তবে পরবর্তীতে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
৪. আই গুগল: ২০০৫ সালে আই গুগল চালু হয়েছিল। মূলত নিজের মতো করে গুগলের হোমপেজ তৈরি করে নেওয়ার সুবিধা দিতেই আই গুগল চালু করা হয়। এখানে পছন্দমতো বিভিন্ন উইজেট যুক্ত করা যেত। ২০১৩ সালে বন্ধ হয় আই গুগল।
৫. ডজবল: অনেকটা ফোরস্কয়ারের মতোই ছিল ডজবল যা ২০০৫ সালে গুগল কিনে নেয়। তবে এটিও পরবর্তীতে বন্ধ করে দেয় গুগল।
৬. গুগল হ্যাংআউটস অন এয়ার: এটি ছিল গুগলের লাইভ স্ট্রিমিং সার্ভিস। তবে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এ জায়গা দখল করে নেয় ইউটিউব লাইভ।
৭. গুগল ক্যাটালগস: অনলাইনে কেনাকাটা আরও সহজ করতে ক্যাটালগ নামের এই সেবাটি চালু করেছিল গুগল। তবে ২০১৫ সালে এটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
৮. নেক্সাস কিউ: ২০১২ সালে ডেভেলপার কনফারেন্সে নেক্সাস কিউ নামের এই মিডিয়া প্লেয়ারটি বাজারে আনার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে বাজারে আসার আগেই এটি ফ্লপ হওয়ায় গুগল একে বিদায় জানাতে বাধ্য হয়।
৯. গুগল ভিডিও: ইউটিউব কেনার আগে এটিই ছিল গুগলের ভিডিও স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম। ২০০৬ সালে ইউটিউবের মালিকানা পেলেও ২০০৯ সাল পর্যন্ত গুগল ভিডিওতে নতুন ভিডিও আপলোডের সুবিধা চালু ছিল। ২০১২ সালে এটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১০. গুগল ওয়েভ: পারস্পরিক বার্তা আদান প্রদান এবং ডকুমেন্ট শেয়ার কিংবা সবাই মিলে সম্পাদনা করার সুবিধা ছিল ওয়েভে। তবে ব্যবহারকারীদের মাঝে একেবারেই জনপ্রিয়তা না পাওয়ায় এক বছরের মাথায় এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১১. বাজ: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবেই বাজ তৈরি করেছিল গুগল। তবে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে ছিল গুগল বাজ। পরবর্তীতে বাজ বন্ধ করে চালু করা হয় গুগল প্লাস।
১২. গুগল গ্লাস: গুগলের আরও একটি ব্যর্থ উদ্যোগ হলেও একেবারেই ব্যর্থ বলা যাবে না। ২০১২ সালে বাজারে এলেও উচ্চমূল্য, সফটওয়্যারজনিত সমস্যা এবং আরও কিছু কারণে সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছাতে পারেনি গুগল গ্লাস।
১৩. লাইভলি: এটিও অনেকটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘরানার ছিল। গুগল তখন দাবি করেছিল একাকীত্ব কাটাতে বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের এক ভিন্ন মাধ্যম হবে লাইভলি। কিন্তু এখানেও সফল হয়নি গুগল। ২০০৮ সালে বন্ধ হয় লাইভলি।
১৪. অ্যানসারস: গুগলের প্রথম উদ্যোগ ছিল এটি। ল্যারি পেজের আইডিয়া থেকেই প্রশ্নোত্তরের এই প্লাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছিল। তবে চার বছরের বেশি টিকে থাকতে পারেনি গুগল অ্যানসারস।