চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

গান্ধীবাদী ঝর্ণাধারা চৌধুরী মারা গেছেন

গান্ধীবাদী চেতনায় জীবন উৎসর্গ করা সমাজকর্মী ঝর্ণাধারা চৌধুরী মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ফরহাদ চ্যানেল আই অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পর গত ২ জুন ঝর্ণাধারা চৌধুরীকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে গত সপ্তাহে স্ট্রোক করার পর থেকে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।

নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার গান্ধী আশ্রমের সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন সমাজকর্মী ঝর্ণাধারা চৌধুরী। ২০১৫ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। ২০১৩ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী অর্জন করেন তিনি।

গান্ধী আশ্রমের পরিচালক রাহা নব কুমার চ্যানেল আই অনলাইনকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তার মরদেহ রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে রাখা হবে। শুক্রবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধার জন্য মরদেহ আনা হবে। এরপর বেলা ৩টায় নোয়াখালীর গান্ধী আশ্রমে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে।

এরপর তার শেষ ইচ্ছানুসারে মরদেহ সন্ধানীতে দান করা হবে।

লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের কালুপুর গ্রামে ১৯৩৮ সালের ১৫ অক্টোবর ঝর্ণাধারা চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম গান্ধীয়ান প্রথম চৌধুরী ও মায়ের নাম আশালতা চৌধুরী।

বাবা মারা যাওায়ার পর ১৯৫৬ সালে মহাত্মা গান্ধীর প্রতিষ্ঠিত অম্বিকা কালিগঙ্গা চ্যারিটেবল ট্রাস্টে (বর্তমানে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট) তিনি যোগ দেন। ১৯৬০ সালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সংসারত্যাগীদের সংগঠন চট্টগ্রামের প্রবর্তক সংঘে যোগদানের মাধ্যমে সরাসরি মানবসেবা নিয়োজিত হন তিনি।

সমাজসেবার পাশাপাশি ঝর্ণাধারা তার পড়ালেখাও চালিয়ে নিতে থাকেন। তিনি চট্টগ্রামের খাস্তগীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ও ঢাকা থেকে স্নাতক পাস করেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আগরতলায় ত্রাণ কাজে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৭৯ সালে পুনরায় গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টে ফিরে আসেন। ১৯৯০ সালের ১৩ জুন চারু চৌধুরীর মৃত্যুর পর তিনি ট্রাস্টের সচিবের দায়িত্ব পান।