বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের চলমান ধর্মঘটের সপ্তম দিন আজ। শিক্ষকরা তাদের দাবির পক্ষে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছেন। ওই প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেবেন শিক্ষক প্রতিনিধিরা। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন, তিনি ফিরলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
কর্মবিরতির কারণে ক্ষতির শিকার শিক্ষার্থীরা চলমান পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষকে সমঝোতার অনুরোধ জানিয়েছেন।
অধ্যাপকদের একটি অংশকে সিনিয়র সচিবের সমান সুবিধা দেয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে ১১ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন ৩৭টি সরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষক।
শিক্ষকদের ক্লাসে ফেরাতে এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন। তবে ১২ জানুয়ারি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে শিক্ষকদের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চেয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমরা সচিব হওয়ার দাবি করছি না। শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো নেই। জাতীয় বেতন কাঠামোতেই শিক্ষকদের বিষয়টি নির্ধারিত। শিক্ষকরা আগেও গ্রেড-১ এ ছিলেন। এখনো গ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-১ এ থাকার পদ্ধতিটিই আমরা প্রস্তাবনায় বর্ণনা করেছি।’
শিক্ষকরা আশা করছেন শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে। তবে দাবি মানা না হলে গণপদত্যাগের বিষয়টিও মাথায় আছে তাদের।
‘শিক্ষকদের মনে ক্ষোভ আছে, কিন্তু সেগুলো আমরা ভবিষ্যতে বলবো,’ জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতা ড. মো. নিজামুল হক। এই মুহূর্তে পদত্যাগ একটি বিরাট সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি। ‘তবে আত্মমর্যাদার জন্য আমরা যে কোনো আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত।’
চলমান পরিস্থিতিতে উদ্বেগে আছেন শিক্ষার্থীরা। হঠাৎ করে এভাবে ক্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই অস্বস্তিকর একটি বিষয় বলে মনে করেন তারা। পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষাগুলো চললেও নতুন কোনো পরীক্ষার তারিখ দেয়া হচ্ছে না। প্রথম বর্ষের ক্লাসও শুরু হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষার্থীরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। দ্রুত সমাধানের আশা করছেন তারা।
সিনিয়র অধ্যাপকদের ১২ শতাংশকে সিনিয়র সচিবের সমান এবং ২৫ শতাংশ অধ্যাপককে গ্রেড-১ দেয়ার প্রস্তাব করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ হাজার শিক্ষকের মধ্যে অধ্যাপক আছেন ৪ হাজার ২শ’রও বেশি। তবে সিনিয়র অধ্যাপক বা গ্রেড-১ ভুক্ত শিক্ষক আছেন ৮২৩ জন।