কাঠের তৈরি ছোট্ট এক পাটি জুতো। ছোট্ট বলতে ছোট শিশুর জুতো নয়, একেবারেই ছোট – লম্বায় একটা ম্যাচের কাঠির অর্ধেক। ৭০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া জুতোটি আবিষ্কার করেছে পোল্যান্ডের স্থানীয় একটি সংস্থা।
তবে শুধু পুরনো বলেই যে আবিষ্কারটি ভিন্নরকম তা নয়। কাঠ থেকে খোদাই করে তৈরি জুতোর পাটিটির মালিক ছিলেন এক নারী, যাকে নাৎসী বাহিনী অশউইজ ডেথ ক্যাম্পে হত্যা করেছিল।
অশউইজ-বারকেনাউ’র কাছে অবস্থিত স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো অনুসন্ধান ও সংরক্ষণের কাজে নিয়োজিত ফাউন্ডেশন অব মেমোরি সাইটস (এফপিএমপি)-এর প্রধান অ্যাগনিয়েজকা মোলেন্ডা জানান, জুতোটি সম্ভবত একটি গয়নার অংশ। একে চমৎকার একটি শিল্পকর্ম বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মোলেন্ডা বলেন, “জুতোটি মাত্র ৭ মিলিমিটার লম্বা এবং একটা ছোট চেইনের মাথায় ঝুলানো। যা দেখে বোঝা যাচ্ছে, ডেথ ক্যাম্পে আটকদের একজন এটাকে গয়না হিসেবে পরত।” তবে গয়নার মালিক সেই নারীর নাম-পরিচয় সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।
জুতোটি চলতি মাসেই খুঁজে পেয়েছে মোলেন্ডার সংস্থা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পোল্যান্ড দখলের পর অশউইজে মূল ডেথ ক্যাম্পটি তৈরি করে জার্মান নাৎসী বাহিনী। ওই ক্যাম্পের পাশে বুডি-বরে অবস্থিত অশউইজ উপ-শিবিরে একটি ভবনের চিলেকোঠায় মেরামত কাজ করার সময় গহনার টুকরোটি পাওয়া যায়।
ওই ভবনটি এক ভয়াবহ রক্তাক্ত ঘটনার সাক্ষী। ১৯৪২ সালের ৫ অক্টোবর ক্যাম্পরক্ষীরা সেখানে আটক ৯০ জন ফরাসি-ইহুদি নারী বন্দিকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। কাঠের জুতোটি ওই হতভাগ্য বন্দিদেরই কারও হতে পারে বলে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান মোলেন্ডা।
অশউইজে বন্দিদের জন্য সব ধরণের গয়না তৈরি ও পরা নিষিদ্ধ ছিল। মোলেন্ডা মনে করেন, জুতোটি ডেথ ক্যাম্পে বন্দিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ছোট একটি প্রতীক ছিল।