চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

খালেদা জিয়ার ৫, তারেকের ১০ বছরের কারাদণ্ড

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এ মামলার অন্য চার অাসামীকে বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তাছাড়াও আত্মসাত করা ২ কোটি, ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা খালেদা জিয়া বাদে অন্য অাসামীদের জরিমানা করেছেন আদালত।

পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো: আখতারুজ্জামান বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করেন। এসময় খালেদা জিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পর খালেদা জিয়া দেশের দ্বিতীয় কোনো সরকার প্রধান হিসেবে এ সাজা পেলেন।

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আইন সবার জন্য সমান। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী আজকেই তার জেলখানায় যাওয়া উচিৎ।

বিএনপির পক্ষ দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই রায়কে প্রতিহিংসার রায় উল্লেখ করে বলেন হয়, এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার প্রতিফলন ঘটেছে। আমরা এর প্রতি নিন্দা, ধিক্কার এবং ঘৃণা জানাই।

রায়ের সময় আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মাদ আলী, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুর রেজাক খান, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।

গত ২৫ জানুয়ারি এই মামলার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হলে আদালত রায়ের জন্য আট ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই জরুরি অবস্থার মধ্যে রমনা থানায় এই মামলাটি করে দুদক।খালেদা জিয়া-বিএনপি-রায়-সংঘর্ষ

তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে এই মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

এরপর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত খালেদাসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং দুদক আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে।

ছয় আসামীর মধ্যে খালেদা জিয়া জামিনে ছিলেন। আর বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ রয়েছেন কারাগারে। এদিকে তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

আলোচিত এই মামলায় দুদক ও আসামিপক্ষ আদালতে মোট ১৬ কার্যদিবস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। আর মোট ২৩৬ কার্যদিবস শুনানির পর মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে।

খালেদা জিয়ার অনাস্থার কারণে উচ্চ আদালতের নির্দেশে এর আগে তিনবার এই মামলার বিচারক বদল হয়েছে।