চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

খালেদা জিয়ার প্রতি এধরণের আচরণ জাতি কখনো আশা করেনি: কর্নেল অলি

একজন সাবেক  প্রধানমন্ত্রী এবং সাবেক সেনাপ্রধানের সহধর্মিনীকে অন্যায়ভাবে জেলে বন্দি রাখার  পরিণতি শুভ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন এলডিপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মেজর জিয়াউর রহমানের একসময়কার ঘনিষ্ঠ সহচর কর্নেল (অব:) অলি আহমদ।

শনিবার সকালে রাজধানীর  এফডিসি এলাকায় অবস্থিত এলডিপির জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

কর্নেল অলি বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি এধরনের আচরণ হবে তা জনগণ কখনো আশা করেনি। তিনি একজন সাবেক সেনাপ্রধানের স্ত্রী, সাবেক তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, কয়েকবারের বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বিএনপির চেয়াপার্সন। যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘসহ অনেক দেশ এই আচরণে উদ্বেগ জানিয়েছে। তাদের প্রতি আমরা ধন্যবাদ জানাই। সমগ্র জাতির এর প্রতিবাদ জানাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যে কারণে খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে তার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি কোন অর্থ তসরুফ করেননি। হয়তো কিছু নিয়মে ভুল ছিলো। এর বাইরে কিছু না। দেশে বড় বড় দুর্নীতিবাজদের কোন বিচার হচ্ছে না। হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে সরকারের মহলের অনেকে। তাদের কোন বিচার হচ্ছে না। অথচ কোন দোষ না করেও বেগম খালেদা জিয়াকে  জেলে বন্দি করা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার এই রায় সরকারের পূর্বপরিকল্পিত দাবি করে কর্নেল অলি বলেন, এই রায় সরকারের পূর্বপরিকল্পিত, আর নয়তো আকস্মিকভাবে রায়ের ১৫ দিন আগে কেন নাজিমউদ্দীন রোডের পরিত্যক্ত কারাগার সংস্কার করা হবে? বৃহস্পতিবার কেন রায় দেয়া হবে? ৬৩২ পৃষ্ঠার রায় কিভাবে ১০ দিনের ভেতর লেখা সম্ভব হবে?

কর্নেল অলি খালেদার এই রায় ও তার ডিভিশন প্রাপ্তির বিষয়ে বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে হঠাত করে কেন নাজিমউদ্দীন রোডের পরিত্যক্ত কারাগার সংস্কার করা হলো? বিএনপি এই খবর রাখলো না কেন? আর বৃহস্পতিবার রায়ের দিন দেয়ার পেছনে কারণ ছিলো যেন শুক্রবার ও শনিবার খালেদা জিয়াকে জেলে রাখা। তাও আবার পরিত্যক্ত জেলে! সেখানে তাকে কয়েদিদের পোশাক পরানো হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। এর সঙ্গে এরশাদ জড়িত আছে বলে আমি মনে করি। কারণ তিনিও নাজিমউদ্দীন রোডের জেলে এক সময় বন্দি ছিলেন। বেগম জিয়াকে কেন সেখানে রাখা হলো? তাকে তো কাসিমপুর বা ঢাকায় নির্মিত নতুন কারাগারেও রাখা যেতো। বেগম খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধামন্ত্রী, সাবেক সেনাপ্রধানের স্ত্রী। তার জন্য কেন ডিভিশন চেয়ে আবেদন করতে হবে? এটিতো এমনিতেই পাওয়ার কথা।

তিনি বিএনপিকে লক্ষ্য করে বলেন, বিএনপি অতি দ্রুততার সাথে আগামীকালই যেন হাইকোর্টে আপিল করে  খালেদা জিয়ার জামিনের ব্যবস্থা করে। আমি বিচারপতিদের অনুরোধ জানাবো, ন্যায়বিচার করে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করুন।

খালেদা জিয়াকে জেলে বন্দি করার জন্য সরকার সমস্ত তথ্য গোপন রেখেছে বলে দাবি করেন তিনি।

খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখার প্রতিবাদে জনগণ অবশ্যই রাস্তায় নামবে মন্তব্য করে কর্নেল অলি বলেন, সরকারকে এর পরিণতি বুঝতে হবে। আমাদেরকে ধ্বংসাত্মক কোন কাজের দিকে ধাবিত না করার জন্য সরকারের  প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

অনতিবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তির দাবি জানিয়ে বিএনপির ডাকা সকল প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন কর্নেল অলি আহমদ।

আন্দোলন তেমন নেই, এটি কি আপনাদের নমনীয়তা কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা একদমই নমনীয় না। খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তিনি সাবেক সেনাপ্রধানের একজন স্ত্রী। সরকারের এধরনের কর্মকাণ্ডে দেশের সংকট আরো ঘনিভূত হবে। এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।

খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিএনপি নেতৃত্ব সংকটে পড়বে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কারো অনুপস্থিতি কোন দল থেমে থকে না। একজন গেলে আরেকজন তার জায়গা নেয়। আর বেগম খালেদা জিয়াকে বেশি দিন জেলে বন্দি রাখা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। তাকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।