চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

খালেদা জিয়াকে অন্যত্র স্থানান্তর নয়, মুক্তি দিতে হবে: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমাদের প্রিয় নেত্রী একটি ভুয়া মামলায় কারাগারে আছেন। তাকে অন্যত্র স্থানান্তর নয় এই মুহূর্তে মুক্তি দিতে হবে। আমরা তার নি:শর্ত মুক্তি চাই।

রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির এই নেতা। এসময় ‘চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনের ঘটনায় খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হতে পারে’- এমন বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ ও বিভীষিকাময় অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রায় একশত মানুষের মৃত্যুতে গোটা জাতির সাথে আমরাও শোকাহত। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে গতকাল শনিবার সারা দেশে শোক দিবস পালন করছি। এখনো নিখোঁজ ১৫ জনের অধিক। হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে দগ্ধরা কাতরাচ্ছে। স্বজনদের কান্না আর বুক ফাটা আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। সরকার পুরান ঢাকার মৃত্যুপুরীর মৃত্যুর মিছিল নিয়ে কেবল বাগাড়ম্বর করছে। ভোট ডাকাতির সরকারের জনগণের প্রতি কোন জবাবদিহিতা না থাকায় খামখেয়ালী আচরণ করছে। এখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, তারা শুধু কথাই বলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আগুন লাগা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত তাদের আচরণ হলো ‘রোম যখন পুড়ছিল নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল’ অবস্থার মতো। পুরান ঢাকায় মৃত্যুর সঙ্গে বসবাস করছেন বাসিন্দারা। আর সরকার নিজেদের অবৈধ মসনদ সুরক্ষায় গ্রেপ্তার-মামলা-অত্যাচারে ব্যস্ত। তথাকথিত উন্নয়নের নামে পকেট ভারী করা হয়েছে, অথচ জনগণের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়নি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি গভীর উদ্বেগ-উৎকন্ঠা এবং আতংকের সঙ্গে বলছি, আমাদের প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রী, বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা বেগম খালেদা জিয়াকে যে পরিত্যক্ত কারাগারে অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে তার চারপাশে রাসায়নিক বিস্ফোরকের ডিপো। চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানসন থেকে নাজিমউদ্দিন রোডে দেশনেত্রীর কারা প্রকোষ্ঠের দূরত্ব মাত্র দেড় থেকে দুই শত মিটার। খুব কাছে হওয়ায় এই কারাগারের পুকুরে পাম্প বসিয়ে অগ্নিকাণ্ডের রাতে সেখান থেকে পাইপে নন্দ কুমার দত্ত রোড দিয়ে চুড়িহাট্টায় পানি নিয়েছিলো দমকল বাহিনী।

রিজভী আরো বলেন, আমরা উৎকন্ঠিত হয়ে পড়ি পরিত্যক্ত কারাগারে একমাত্র বন্দী দেশনেত্রীকে নিয়ে। তিনি গুরুতর অসুস্থ। বসতে পারছেন না। হাঁটা চলা করতে পারছেন না। তাকে যখন কারাগারে নেয়া হয় তখন তিনি হেঁটে কারাগারে ঢুকলেন এর এখন তিনি হুইল চেয়ারে করে আদালতে আসছেন। সরকারের কি ভয়ঙ্কর নির্মমতা!

‘‘প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলতে চাই, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কেন আটকে রেখেছেন? কেন তার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন? আপনাকে এরকম বিস্ফোরণ্মুখ বারুদের মাঝে বন্দী রাখা হলে কেমন লাগতো? কেনো আপনি ৭৩ বছরের গুরুতর অসুস্থ তিন বারের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বন্দী করে রেখেছেন? কেন আপনি বিদ্বেষ-বুদ্ধি নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে আছেন? আপনি এবার প্রতিহিংসার আগুন থেকে নিবৃত্ত হোন। দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন’’, বলেন রিজভী।

এসময় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ ও বিভীষিকাময় অগ্নিকাণ্ডে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা উচিত তথ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই ধরনের উদ্ভট লোককে তথ্যমন্ত্রী করে আমার মনে হয় সরকার অন্যায় করেছে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচিত তাকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই প্রধান করা।