কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের জন্য সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে কঠিন খেসারত দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির ওপর নির্ভর করবে আগামী জাতীয় নির্বাচন। তাকে বন্দি রেখে আগামী একদলীয় ফ্যাসিবাদী নির্বাচন করার উদ্যোগ নিলে কঠিন প্রতিরোধে তা নস্যাৎ করে দেয়া হবে’।
রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের প্রধান নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ভিত্তিহীন মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে, কারবন্দী রেখে এখন দেশনেত্রীর সঙ্গে তার স্বজনদেরও দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।
‘১০দিন ধরে পরিবারের কোন সদস্য বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। পরিবারের স্বজনসহ আমারা দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থার কোন খবর পাচ্ছিনা। বিএনপি’র নেতাকর্মীসহ দেশবাসী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’
তিনি বলেন,’আমরা আগেই জানতে পেরেছিলাম দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থার প্রতিদিন অবনতি হচ্ছে। তার হাঁটা চলা করতে অসুবিধা হচ্ছে। এখন তাকে পরিত্যক্ত স্যাঁতসেতে অস্বাস্থ্যকর ভবনে রাখায় নানা ধরণের রোগ ও সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন তিনি। এমনকি সরকারি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়াকে অর্থোপেডিক্স বেড দেওয়ার এবং ফিজিওথেরাপির সুপারিশ করলেও এখন পর্যন্ত সেটির কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
‘বিএনপি চেয়ারপার্সনের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা বার বার তার অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। দেশনেত্রী ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সরকার ও কারাকর্তৃপক্ষ তা আমলে নিচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আত্মীয়স্বজনদেরকে তার সঙ্গে দেখা করতে না দেয়াটা সরকারের কালো কাপড় ঘেরা গভীর অন্ধকারের মধ্যে এক ভয়াল ষড়যন্ত্রের অংশ। খালেদা জিয়াকে অশুভ ও দুরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্যেই কারাবন্দি করা হয়েছে বলে আমরা বারবার যে আশঙ্কার কথা বলে আসছি সেটি আরও স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দেশী-বিদেশী চক্রান্তের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করতেই তাকে সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি করা হয়েছে। এখন তাকে চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে প্রতিহিংসার এক বীভৎস প্রতিশোধ নিতে চান কী না, তা নিয়ে দেশের মানুষ উৎকণ্ঠিত। তাকে মুক্তি না দিলে অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের জন্য সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে কঠিন খেসারত দিতে হবে।
তিনি বলেন, জিয়ার মুক্তির ওপর নির্ভর করবে আগামী জাতীয় নির্বাচন। তাকে বন্দি রেখে আগামী একদলীয় ফ্যাসিবাদী নির্বাচন করার উদ্যোগ নিলে কঠিন প্রতিরোধে তা নস্যাৎ করে দেয়া হবে।
রিজভী বলেন,’সকল জনমতকে উপেক্ষা করে আকস্মিকভাবে বাংলাদেশ-ভারত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার। এমনকি তাদের বাছাইকৃত লোক দিয়ে গঠিত একদলীয় জাতীয় সংসদে আলোচনা করারও প্রয়োজন বোধ করেনি। প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় ঋণ বাস্তবায়ন এবং সার্বিক সহযোগিতার বিস্তার ঘটাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট চারটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে কি না, সেই সংশয় এখন বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে।