করোনাভাইরাসের প্রকোপে সারাদেশ এক কঠিন সময় পার করছে। স্বাভাবিক জীবন ও কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটার ফলে অসহায় হয়ে পড়েছে দেশের এক বিরাট অংশ। মৌলিক চাহিদা মেটাতে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয়েছে তাদের।
সরকারসহ বিভিন্ন গোষ্ঠি এই দুর্যোগে এগিয়ে এসেছে সাধ্যমতো। দিনমজুর থেকে শুরু করে নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষদের পাশে নিত্য খাদ্যপণ্যের সহায়তা করা হচ্ছে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে। তবে এই ক্রান্তিকাল কবে শেষ হবে, তার কোনো কূল-কিনারা না থাকায় খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি শিক্ষা, বাসস্থান ও চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা খরচ সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।
গার্মেন্টসসহ নানা খাতে সরকারি প্রণোদনা বেতনের অংশ হিসেবে শ্রমিকদের হাতে পৌঁছালেও রিক্সাওয়ালা, ফুটপাতের হকার, চা দোকানীসহ দিন এনে দিন খায় ধরণের মানুষ কিছু পাচ্ছে না। সরকারি নিয়ম ও ব্যাংকিং ধারাতে তারা কিছু পাবারও যোগ্য না। মধ্যবিত্ত অনেকের অবস্থা আরও খারাপ, না তারা সাহায্যের আওতায় আসছে, না তারা লজ্জায় চাইতে পারছে।
একটি পরিবারে খাদ্যের চাহিদার বাইরেও ঘর ভাড়া, শিক্ষা খরচ ও নিয়মিত ওষুধের প্রয়োজন হয়ে থাকে। সঙ্কটকালে খাদ্য হয়তো কোনো না কোনোভাবে আসলেও ওইসব খাতের জন্য নগদ অর্থের প্রয়োজন। যেহেতু কর্মহীন মানুষদের কোনো আয় হচ্ছে না, সেজন্য তারা নানামুখি কষ্টে দিনযাপন করছে বলে নানা গণমাধ্যম প্রতিবেদনে উঠে আসতে শুরু হয়েছে।
সামনে ঈদুল ফিতর, সঙ্কটময় করোনার কারণে হয়তো এবছর সেভাবে আয়োজন ও উদযাপন হবে না। ফলে স্বাভাবিক নিয়মে জনগণের অর্থ প্রবাহও বন্ধ থাকবে। কার্যত নগদ অর্থের সঙ্কট যে হবে, তা বোঝাই যাচ্ছে। নগদ অর্থের সঙ্কট হলে দেশে চুরি-ডাকাতি-রাহাজানি বেড়ে যেতে পারে বলে অপরাধ বিজ্ঞানীরা নানাসময়ে জানিয়ে আসছেন। সরকারসহ নানা কতৃপক্ষের ওই বিষয়ে জরুরি নজর দেয়া একান্ত প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।
যাকাত-ফিতরাসহ সরকারি ত্রাণের মাধ্যমে দুঃস্থদের হাতে নগদ অর্থের প্রবাহ যতোটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখা জরুরি। আমাদের আশাবাদ, সরকার এ বিষয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা ও গাইডলাইন দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে সহায়ক ভুমিকা রাখবে।