চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কড়াইল বস্তিতে বারবার আগুনের কারণ কী?

এক বছরের মধ্যে তিনবার আগুন লাগলো রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে। এর আগে গতবছর ৪ ডিসেম্বর, তার অাগে ১৪ মার্চ। এর আগেও ঘটেছে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা।

বারবার আগুনের কারণ কী?

ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: কড়াইল বস্তিতে অনেক লোকের বাস। সেখানে রয়েছে অবৈধ গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ। যার জন্য বারবার ঘটছে বড় ধরণের অগ্নিকাণ্ড।

সেখানে বসবাসরত বাসিন্দাদের অসচেতনতাকে আগুনের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন তিনি।

কড়াইল বস্তির বাসিন্দাসহ অনেকেই বারবার আগুনের পেছনে নাশকতাকে দায়ী করেন। ফায়ার সার্ভিস অবশ্য তা মনে করে না।

সহকারি পরিচালক মাসুদুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনেকে বলেন, ‘এটা কোন নাশকতা নয়। সেখানে বসবাসরতদের অনেকেই হিটারে রান্না করেন। অনেকের রয়েছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। এছাড়া বৈদ্যুতিক শটসার্কিটের কারণেও প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে।

‘ঘনবসতি হওয়ায় সামান্য আগুন অনেক সময় বড় আকৃতি নেয়। সামান্য আগুন নেভানোর মতো ব্যবস্থাও না থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে যায়। যার জন্য হয়ে যায় বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি।’

এর অাগেও একাধিকবার আগুন লেগেছে। গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি যথারীতি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়ে সুপারিশমালা প্রণয়ণের পরও একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সেখানে ঘটেই চলেছে।

এ বিষয়ে সহকারি পরিচালক মাসুদুর রহমান আকন্দ বলেন: আগুন না লাগার বিষয়ে আমাদের যে পরামর্শ থাকে তা কখনই মেনে চলেন না সেখানে বসবাসরত বাসিন্দারা। দাহ্যবস্তুসহ বৈধ-অবৈধ অনেক কিছুই থাকে এই বস্তিতে। যার কারণে ঘনঘন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হবার বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, সেখানে আগুন লাগলে নেভানোটা অনেক কঠিন। রাস্তা সরু। যার কারণে ফায়ার সার্ভিসের বড় বড় গাড়ি সেখানে পৌঁছতে পারে না। আর তাই নৌকা দিয়ে পাম্পের মাধ্যমে পানি দিতে হয়। সেই সঙ্গে দমকা বাতাসে আগুন ছড়িয়ে যায় সব জায়গায়।

গুলশান জোনের সহকারি পুলিশ কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মূলত ঘনবসতিই সে এলাকায় আগুনের মূল কারণ। সেখানে জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত নিম্ন। চুলা ব্যবহারের পর নেভানো হয় না। মশার কয়েল থেকে আগুন ধরে প্রায়ই ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে।

‘নেই পর্যাপ্ত সচেতনতা।’

এছাড়া দুর্বল অবকাঠামোকেও তিনি আগুনের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন।

কড়াইল বস্তির জমির মূল মালিক বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। প্রতিষ্ঠানটি  আদালতের আদেশ নিয়ে ২০১২ সালে কড়াইলে জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে। প্রথম দিনের অভিযানে শ’খানেক ঘর উচ্ছেদ করতে তারা সফল হলেও দ্বিতীয় দিনে থেমে যায় অভিযান। সেদিন হাজার হাজার বস্তিবাসী গুলশান-মহাখালী এলাকার সড়কে নেমে এলে অচল হয়ে যায় ওই এলাকা।

ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান বনানীতে গড়ে ওঠা এই বস্তি গার্মেন্ট শ্রমিক, শ্রমজীবি ও নিম্ন অায়ের অসংখ্য মানুষের ঠিকানা। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এই বস্তি মাদকের কারবারিসহ অবৈধ বিভিন্ন কাজের অন্যতম আখড়া বলে পরিচিত।

ছবি: জাকির সবুজ।