ভারতের উত্তর প্রদেশের পিলিভিত টাইগার রিজার্ভ (পিটিআর) কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, স্থানীয় লোকজন পরিবারের বৃদ্ধ সদস্যদের অভয়ারণ্যের গভীরে পাঠিয়ে দিচ্ছে বাঘের খাবার হিসেবে। তারপর তাদের মৃতদেহ এনে কাছাকাছি মাঠগুলোতে ফেলে রেখে বাঘের হামলা হিসেবে দেখিয়ে সরকারের কাছ থেকে লাখ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দাবি করছে।
তাই অদ্ভুত এবং একই সঙ্গে মারাত্মক নির্মমতার এই ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছে রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ।
সাম্প্রতিক সময়ে ওই এলাকায় বাঘের আক্রমণে বয়স্ক ব্যক্তিদের নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে গেছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত শুধু মালা ফরেস্ট রেঞ্জ এলাকায়ই এমন সাতটি মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত সংস্থা ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো’র (ডব্লিউসিসিবি) কলিম আথার পিলিভিত এলাকায় হওয়া বাঘের হামলায় মৃত্যুর ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করে নিহতদের পরিবারের সম্পৃক্ততার বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসেন। তিনি পিটিআর ও এর আশপাশে হওয়া এ ধরণের হামলাগুলো যাচাই করেন, প্রতিটি ঘটনা ও মৃতদেহ উদ্ধারের স্থানগুলো আলাদা আলাদা করে খতিয়ে দেখেন।
এছাড়া আথার স্থানীয়দের বক্তব্যও নেন। অবশেষে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে তিনি এর ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরি করে ডব্লিউসিসিবি’তে পাঠিয়েছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব ব্যুরো ন্যাশনাল টাইগার কনজার্ভেশন অথরিটি’র ওপর ছেড়ে দিয়েছে।
রিজার্ভের ভেতর কেউ বাঘের আক্রমণে মারা গেলে আত্মীয়রা ক্ষতিপূরণ পায় না। এ কারণেই লাশগুলো কাছের মাঠগুলো এনে ফেলে রাখা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অবশ্য স্থানীয়দের দাবি, বয়োজ্যেষ্ঠরা স্বেচ্ছায়ই পরিবারের স্বার্থে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করছেন।
ষাটোর্ধ্ব কৃষক জারনাইল সিং টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, যেহেতু লোকজন বাঘের অভয়ারণ্য বানিয়ে ফেলার কারণে বন থেকে আর সম্পদ আহরণ করতে পারছে না, সেহেতু বৃদ্ধরা মনে করেন, তাদের পরিবারকে দারিদ্র্য থেকে বাঁচাতে এটাই একমাত্র উপায়।