বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সমান্তরাল মাঠ তৈরির বদলে ক্রসফায়ার এবং গুমের মাধ্যমে বিরোধী দলকে দমন করছে সরকার।
ভোটারবিহীন সরকার গুম, খুন, মামলার মাধ্যমে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দুরে রাখার চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগও করেন দলের মহাসচিব।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনের জন্য যখন সব রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ সমান্তরাল মাঠ তৈরি করা প্রয়োজন বেড়ে চলেছে, তখন ক্রসফায়ার, গুম, খুন, গ্রেফতার মিথ্যা মামলা, দমন, নির্যাতন আবাদ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সকল সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে সরকার। আবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার লক্ষ্যে নির্বাচনের পূর্বেই বিরোধীদলকে মাঠ থেকে দুরে সরিয়ে দেওয়ার হীন চক্রান্ত করছে।’
তিনি বলেন, নির্বাচন করতে হলে মাঠকে সমান্তরাল করতে হবে। সমস্ত মামলা তুলে নিতে হবে। বিরোধীদলকে মামলা হামলার মাধ্যমে সমান্তরাল হতে পারে না।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘এটা স্পষ্ট হচ্ছে এখন যে নজিরবিহীন দ্রুততার সাথে মামলা শেষ করার প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে, এই সরকার বেগম জিয়াকে ভয় করে বলেই তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়। আমরা সরকারের এই অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। যেভাবে পুলিশ-র্যাব দিয়ে আদালত ও আদালত সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রাখে তাতে মনে হয় কোন সামরিক শাসনের অধীনে সামরিক আদালতে এই বিচারকার্য চলছে।
‘বিগত কয়েক দিনে সরকারের মন্ত্রী, জাতীয় পার্টির সদস্য এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এই অবৈধ সরকারের বিশেষদূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন,“অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে যেতে হবে।” তাহলে দেশনেত্রীর মামলার রায় পূর্বেই নির্ধারিত। এই অবৈধ সরকার পূর্বেই রায় লিখে রেখেছেন। তবে এই বিচারের প্রহসনের কোনও প্রয়োজন ছিল না।’
দেশে আইনের শাসন নেই মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, ‘এতে ন্যায় বিচার সুদুর পরাহত সেটাই প্রমাণিত হলো। বিচার হবে প্রধানমন্ত্রী যা চাইবেন তাই। এখন পর্যন্ত এই বক্তব্যের জন্য যা আদালত অবমাননার সামিল তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে বলপূর্বক দেশ থেকে বহিষ্কার ও পদত্যাগে বাধ্য করার মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শেষবারের মতো নি:শেষ হয়েছে। নিম্ন আদালতের বিচারকদের আচরণবিধি সরকারের ইচ্ছা মতোই হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ প্রমুখ।