মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েও প্রায় পাঁচ বছর বেঁচে ছিল কেরানীগঞ্জের সন্ত্রাসী আমির।গেল বছর পুলিশকে ধোঁকা দিয়ে পালিয়েও যায় এই দুর্ধর্ষ এ সন্ত্রাসী।
মঙ্গলবার দুপুরে পুরান ঢাকার জনসন রোডে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ মিজান শাফিউর রহমান।
পুলিশ সুপার বলেন: আগে থেকেই আমিরের নামে হত্যা মামলা থাকলেও মূলত আলোচনায় আসে ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর। সেদিন বাসার সামনে থেকে মা, বোন আর গাড়িচালককে গুলি করে শিশু পরাগ মণ্ডলকে অপহরণ করে আমির। পরাগ অপহরণের ১৪ দিনের মাথায় ২৩ নভেম্বর অপহরণ মামলার প্রধান আসামি মোক্তার হোসেন ওরফে ল্যাংড়া আমির টঙ্গীতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে বলে খবর বের হয়।
পরে জানা যায়, মাথায় গুলিবিদ্ধ হলেও বেঁচে আছে আমির। সুস্থ হয়ে কারাগারে অবস্থানের একপর্যায়ে ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট ঢাকার আদালতের হাজতখানা থেকে পুলিশকে ধোঁকা দিয়ে সে পালিয়ে যায়।
ঢাকার পুলিশ সুপার আরো বলেন: গত কয়েক মাসে তার গতিবিধি ও একাধিক ব্যবসায়ীর ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া ডজনখানেক ব্যবসায়ীর ঠিকানায় চিরকুট পাঠিয়ে বিভিন্ন অঙ্কের চাঁদা দাবি করে সে। পুলিশকেও হত্যার হুমকি দেয় আমির।
গত ২২ মার্চ চিকিৎসক দম্পতি আবু নোমান ও শাহানা নোমানের রিকশা থামিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে চিরকুট দেয় সে। চিরকুট দেওয়ার সময় গুলি ছুঁড়ে আহত করে তাদের বহনকারী রিকশাচালককে। চলে যাওয়ার সময় বলেন, ২০ লাখ টাকা না দিলে পরের গুলিটা তাদের বুকে করা হবে। এরপর আতঙ্কে কেরানীগঞ্জ ছাড়েন ওই দম্পতি।
গত ২২ মে দিনেদুপুরে জিয়ানগর এলাকায় ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামের রিকশা থামিয়ে একই কায়দায় তার পায়ে গুলি করে আমির। সর্বশেষ গত মাসে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় ব্যবসায়ী শাহ আলমের বুকে গুলি চালায় সে।
নিহত সন্ত্রাসী আমিরের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম এলাকায়। জমি ব্যবসার সূত্র ধরে কেরানীগঞ্জের পশ্চিমপাড়া এলাকায় থিতু হয় সে। পরে জড়িয়ে পড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে। পায়ের সমস্যায় ঠিকমতো হাঁটতে না পারায় তাকে ল্যাংড়া আমির নামেই ডাকতেন স্থানীয়রা।