যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে (ক্যাপিটল বিল্ডিং) ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা।
স্থানীয় সময় বুধবারের ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১ নারীর নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
হামলার সময় মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন চলছিল। যে অধিবেশনে নবনির্বাচি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয়কে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছিল।
জো বাইডেন এই ঘটনাকে একটি ‘বিদ্রোহ’ বলে আখ্যায়িত করেন। আর ট্রাম্প একটি ভিডিও বার্তায় তার সমর্থকদের বাড়ি ফিরে যেতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এমন ঘটনায় বিস্মিত ও স্তব্ধ বিশ্বনেতাদের একজন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি ওই ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক দৃশ্য’ উল্লেখ করে ‘শান্তিপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খল ক্ষমতা হস্তান্তরের’ আহ্বান জানান।
ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে হামলার ঘটনায় নিন্দা করে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর চেয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটন ডিসিতে সংঘর্ষ ও হিংসার ঘটনায় আমি অত্যন্ত আহত। নিয়মমাফিক ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া যেন চলতে থাকে। একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে কখনই বেআইনি আন্দোলনের দ্বারা বিপথে চালিত হতে দেওয়া যায় না।’
এক বিবৃতিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ বলেছেন, ‘এটা পুরোপুরি অসুস্থ এবং হৃদয়বিদারক দৃশ্য। রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল কোন দেশে এ ধরণের ঘটনার মাধ্যমে নির্বাচনের ফলকে বিতর্কিত করা হয়- আমাদের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে এর কোন স্থান নেই।’
আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, ‘ইতিহাস সঠিকভাবেই ক্যাপিটলের উপর এই আক্রমণকে মনে রাখবে, আর সেটি হচ্ছে ‘এই মুহূর্তটি প্রচণ্ড অসম্মান এবং এই জাতির জন্য লজ্জাজনক।’
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘গণতন্ত্রের উপর এই আঘাতের ঘটনায় কানাডিয়ানরা প্রচণ্ড বিরক্ত।’
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, “ট্রাম্প এবং তার সমর্থকদের উচিত শেষ পর্যন্ত আমেরিকার ভোটারদের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া এবং গণতন্ত্রের পদদলন না করা।”
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা যখন গত নভেম্বরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার জন্যে যৌথ অধিবেশনে বসেন, তখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শত শত সমর্থক সেখানে ঢুকে পড়ে।
তারপর কয়েক ঘণ্টা তাদের দখলে চলে যায় ক্যাপিটল বিল্ডিং। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা এসে বিক্ষোভকারীদের বাইরে বের করে দেয়। সেসময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন এক নারী। আহত হন আরও কয়েকজন।
সহিংস এই ঘটনার পর রাজধানী ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ ঘণ্টার কারফিউ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তারপরও শত শত বিক্ষোভকারীকে রাজপথে জটলা করতে দেখা গেছে।