প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্যান্সার গবেষণার ওপর আরও গুরুত্বারোপের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেশের পরিবেশ এবং জলবায়ুর সাথে ক্যান্সার কিভাবে বিস্তার লাভ করে সে জন্য গবেষণা দরকার। কেননা এটা এমন রোগ, যার প্রাদুর্ভাব হচ্ছে কিন্তু সেভাবে ডায়াগনোসিস হচ্ছে না। তাই ক্যান্সার চিকিৎসায় বেশি বেশি গবেষণা দরকার।
‘কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সাইন্স অ্যান্ড ক্যান্সার রিসার্চ’ নামে রোববার নারায়ণগঞ্জে একটি ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার ও হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি আরেকটি বিষয় স্পষ্ট করেছেন। তা হলো; ‘আমাদের দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞান বিশেষ করে ক্যান্সার নিয়ে খুব একটা গবেষণা হচ্ছে না। যেটা হওয়া একান্তভাবে প্রয়োজন।
আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই, তিনি খুব বড় এক বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন। এমনিতেই নানান বিষয়ে গবেষণায় দেশ পিছিয়ে রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা সে জন্য বাজেটের অপ্রতুলতার কথা বারবার জোর দিয়েই বলেন। নিশ্চয়ই এমন আরও অনেক যৌক্তিক কারণ আছে। তবে আমরাও তাদের সঙ্গে এক মত; গবেষণার ক্ষেত্রে বড় বাধা বাজেট বা অর্থ।
আমাদের দেশে ক্যান্সার এমন একটি রোগ, যার অবস্থা ভয়াবহ। দিন দিন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। যদিও ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের প্রকৃত পরিসংখ্যান কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কাছে নাই। তবে বিশ্ব ব্যাংক তাদের একটি জরিপে বাংলাদেশে অন্তত ১৫ লাখ ক্যান্সার রোগী রয়েছে বলে জানিয়েছে। আর বছরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া না গেলেও চিকিৎসক এক পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, প্রতি বছরই বাংলাদেশে ক্যান্সার আক্রান্তদের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, একইভাবে বাড়ছে ক্যান্সারে মৃত্যুর সংখ্যাও। আবার ক্যান্সার আক্রান্তদের একটা বড় অংশ শিশু ও কিশোর। এমনও দেখা গেছে অনেক কম বয়সী শিশুও আক্রান্ত হয়েছে এই প্রাণঘাতী রোগে।
আমরা জানি, ক্যান্সার থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া যায়; তেমন কোনো ওষুধ এখনও আবিষ্কার করতে পারেনি চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। আবার সাময়িক মুক্তিলাভ করা যায়- এমন কিছু ওষুধ পাওয়া গেলেও তাও প্রচুর ব্যয়বহুল। অনেক অর্থ আছে, এমন মানুষ ছাড়া সেই চিকিৎসাও পাওয়া অন্যদের পক্ষে সম্ভব না।
এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে আমরাও এক মত পোষণ করি। ক্যান্সার গবেষণায় অবশ্যই ব্যাপকভাবে কাজ করতে হবে। তবে সে জন্য যে বাজেট বা অবকাঠামোর প্রয়োজন; তা সরকারকেই ব্যবস্থা করতে হবে।