মিরপুর থেকে: কখনও কখনও একটি ক্যাচ মিসের জন্য দিতে হয় চরম মূল্য। ম্যাচই হয়ে যায় হাতছাড়া। মিরপুর টেস্ট শুরুর আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম উদাহরণে টেনে এনেছিলেন ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্টের প্রসঙ্গ। ওই ম্যাচে বেন স্টোকস ৯ রানে জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি করে ফেলেন। না, বাংলাদেশের সঙ্গে জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি করতে পারেননি প্যাট কামিন্স। তাকে থামিয়েছেন প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়া সাকিব। তবে ১১ রানে জীবন পেয়ে কামিন্স যা করলেন, পরিস্থিতি বিচারে তা সেঞ্চুরির চেয়ে কম বীরত্বপূর্ণ নয়।
শের-ই-বাংলা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ১৪৪ রানে অস্ট্রেলিয়ার ৮ উইকেট ফেলে দিয়ে প্রথম ইনিংসে বড় লিডের আশাই জাগায় টাইগাররা। তিন উইকেট পাওয়া সাকিব তখন চতুর্থ শিকারের জন্য মরিয়া। এই বাঁহাতি স্পিনারের করা ডেলিভারির গতি-টার্ন বুঝতে না পেরেও ফ্রন্টফুটে ড্রাইভ খেলে দেন কামিন্স। একটু দেরিতে বল ব্যাটে আসায় টাইমিংয়ে গড়বড় হয়ে বল উঠে যায় আকাশে। কাভার থেকে শফিউল দৌড়ে এসে বলের লাইনেও গিয়েছিলেন, কিন্তু তালুবন্দী করতে পারেননি সহজ ক্যাচটি।
৫৪তম ওভারের শেষ বলে জীবন পাওয়া কামিন্স পরে আউট হয়েছেন ইনিংসের ৬৯তম ওভার। জীবন পাওয়ার পর ১৫ ওভার ব্যাট করেছেন অ্যাগারকে সঙ্গী করে। জুটিটা ৫১ রানের, অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। কামিন্স করেছেন ২৫ রান, টেস্টে এটিই তার সেরা ইনিংস।
মিরপুরের টার্নিং উইকেটে স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরাও যেখানে বলের ভাষা পড়তে হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে ১০ নম্বরে নেমে কামিন্স খেলে গেলেন ৯০টা বল। অ্যাগারের সঙ্গে জুটি বেধে মোকাবেলা করেছেন মিরাজ, সাকিব, শফিউল, মোস্তাফিজ, তাইজুল সবার বলই। অজিদের নবম উইকেট জুটিতে আসা ৫১ রান এসেছে ২৫ ওভারে। প্রায় একটা সেশন সফরকারীদের উইকেট অক্ষত রেখেছেন কামিন্স-অ্যাগার। আর ক্যাচ ছাড়ার চরম মূল্যটা বুঝেছে বাংলাদেশ।
শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয়েছে ২১৭ রানে। শেষ উইকেটটাও সাকিবের। ব্যাটিং করতে জানা অ্যাগার অপরাজিত থেকে যান ৪১ রানে। বাংলাদেশের লিড ৪৩। শফিউল ক্যাচটা না ছাড়লে লিডটা আরও বড়ই হতো হয়ত।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ইনিংসেই অনেকগুলো হাফ-চান্স পেয়েছিল বাংলাদেশ। সাকিব-মিরাজদের করা বল অজি ব্যাটসম্যানদের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে কখনও স্লিপে, কখনও শর্ট লেগে এসেছে। ওই পজিশনগুলোতে ফিল্ডিং করা সাব্বির, ইমরুল, সৌম্য কেউই হাফ-চান্সকে ফুল-চান্সে রূপ দিতে পারেননি। যেজন্য প্রথম ইনিংসে সম্ভাবনা জেগেও লিডটা খুব বড় হয়নি।