চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কোন রোগী অর্থাভাবে যেন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি এম আবদুল হামিদ সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সবোর্চ্চ পেশাদারিত্ব এবং অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার জন্য চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। চিকিৎসা প্রদানের সময়ে জনগণের সক্ষমতা বিবেচনায় রেখে  কোন রোগী অর্থাভাবে যেন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি সোমবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ রোগীদেরকে অধিক সেবা প্রদানের মানসিকতা নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান। তিনি সংবাদপত্র এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কিছু সংবাদের উল্লেখ করে বলেন, চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা ও দায়িত্বে অবহেলার ভয়াবহ শিকার হওয়ার কিছু ঘটনা দেখা যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনায় চিকিৎসকদের এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশে এখনো চিকিৎসক-রোগীর আনুপাতিক হার সমপরিমাণ নয়। তবে তারপরও স্বাস্থ্য সেবা পেতে যাতে জনগণকে হতাশ হতে না হয়, এ জন্য চিকিৎসকদের সবোর্চ্চ প্রচেষ্টা থাকতে হবে। তিনি দেশে ওষুধ ও চিকিৎসা পদ্ধতি দিন দিন আধুনিক হওয়ার উল্লেখ করে স্থানীয় চিকিৎসক ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর জনগণের আস্থা অর্জনে সর্বশেষ আবিষ্কার ও প্রযুক্তি সম্পর্কে আরো জ্ঞান অর্জনের জন্য কিৎিসকদের প্রতি আহবান জানান।

রাষ্ট্রপতি তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সুবিধা পৌঁছে দিতে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ই-সার্ভিস চালু করারও পরামর্শ দেন। বাংলাদেশে তৈরি ওষুধ থেকে রফতানি আয়ের উল্লেখ করে তিনি দেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জল করতে এ ক্ষেত্রে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালানোর জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানী, চিকিৎসক এবং গবেষকদের প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, দেশ ও অঞ্চল ভেদে রোগের প্রকৃতি ও ধরন ভিন্ন। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে রোগের ধরন পরিবর্তন হতে পারে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখেই চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণা চালাতে হবে।

রাষ্ট্রপতি ঘাতক রোগ ক্যান্সার হৃদরোগ এইডস এর মতো মরণ ব্যাধি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে চিকিৎসকদের প্রতি আহবান জানান। কেননা এ সকল রোগের চিকিৎসা খুবই ব্যায় বহুল। এ ধরনের রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সহায়তায় সুস্বাস্থ্য সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সদ্য্য গ্রাজুয়েটদের মেধা ও চিকিৎসা জ্ঞান কাজে লাগিয়ে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে তাদের প্রতি আহবান জানান।

রাষ্ট্রপতি চিকিৎসা ক্ষেত্রে নার্সদের ভূমিকার উল্লেখ করে তারা যাতে আরো ভাল সেবা দিতে পারেন, এ জন্য বিএসএমএমইউতে তাদের প্রশিক্ষণ ও উচ্চতর ডিগ্রি লাভের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে সাত জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে চিকিৎসা ক্ষেত্রে তাদের অবদানের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ছয়জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করার জন্য স্বর্ণপদক দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি, শিক্ষামন্ত্রী নুরূল ইসলাম নাহিদ এমপি, কনভোকেশন বক্তা অধ্যাপক এএইচএম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপ ডা. কামরুল হাসান খান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে কয়েকজন সংসদ সদস্য, সিনিয়র শিক্ষাবিদ,কূটনীতিক, সিনিয়র চিকিৎসক, সংশ্লিষ্ট সচিবগন, উচ্চ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।