চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কোচের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ খারিজ করল ফিফা

লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে নারী ফুটবল বিশেষজ্ঞ হিসেবে বর্ষসেরা ফুটবলার বাছাই করতে ডিয়েগো গুয়াচ্চিকে দায়িত্ব দিয়েছিল ফিফা। দায়িত্বকালে আর্জেন্টিনার কিশোরী ফুটবলারদের যৌন হয়রানি, আপত্তিজনক আচরণ এবং সমকামিতা করেছেন গুয়াচ্চি- এমনসব গুরুতর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। সব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে মামলা খারিজ করে দিয়েছেন ফিফার বিচারকরা।

ঘটনার সূত্রপাত ২০১১ সালে। নারী ফুটবলে একজন প্রশিক্ষক হিসেবে গুয়াচ্চিকে নিযুক্ত করে ফিফা। ২০১৫ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনার দুটি নারী দল অ্যাটলেটিকো রিভার ও দেপোর্তিভো ইউএআই উরকুলজের সাথে কাজ করেছেন তিনি। এসময় ক্ষমতাবলে মেয়েদের যৌন হয়রানি করতেন গুয়াচ্ছি, এমন অভিযোগ তুলে পাঁচ ফুটবলার ফিফার নীতিশাস্ত্র কমিটির কাছে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।

পরে দুই নারীর নেতৃত্বে একটি তদন্ত শুরু হয়ে দুবছরেরও বেশি সময় ধরে চলে কার্যক্রম। শেষে তিনজন পুরুষ ফিফা নীতিশাস্ত্র বিচারকের একটি প্যানেল গুয়াচ্চিকে দোষী সাব্যস্ত করতে অস্বীকার করেছে। ৪০ পৃষ্ঠার রায়ে তথ্য ঘাটতি না পেলেও প্রধান বিচারক ভ্যাসিলিওস স্কোরিস মামলার উপসংহারে বলেছেন, ‘ফাইলের প্রমাণগুলি যথার্থ নয়, ঘটনাগুলি খেলোয়াড়দের সমর্থন করার জন্য অপর্যাপ্ত।’

মঙ্গলবার ফিফা বিবৃতিতে বলেছে, ‘নৈতিকতা তদন্তকারী এবং বিচারকরা ফিফা কোড অব এথিক্সে নির্দেশিত যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন।’

গুয়াচ্চির যৌন হয়রানির শিকার এক ফুটবলার ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন এভাবে, ‘আমি তার আচরণে পুরোপুরি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। না বোঝার ভান করেছিলাম এবং আশা করেছিলাম তিনি কখন থামবেন। আমি কথা না বলায় তিনি পুনরায় অনুরোধ করেন। তারপর তার ক্যামেরা সরিয়ে আমাকে দেখান তিনি কোনো ট্রাউজার পরেননি। শুধু বক্সার পরেছিলেন।’

‘আমি সম্পূর্ণভাবে হতবাক এবং আতঙ্কিত ছিলাম। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। অবিশ্বাস্যভাবে বিশ্রী বোধ করছিলাম। শুধু বলেছিলাম আমি দুঃখিত, আমি একটি সম্পর্কের মধ্যে আছি। আমি এসব করি না। এটাও উল্লেখ করেছিলাম আপনি আমার কোচ আর আমি একজন খেলোয়াড়, আমি এটা চাই না।’

অন্য এক ফুটবলার গুয়াচ্চির বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক যৌন হুমকির ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন, ‘মিস্টার গুয়াচ্চি ক্রমাগত এবং অনুপযুক্তভাবে যৌন রেফারেন্স ব্যবহার করতেন, এমনকি অন্য খেলোয়াড়দের উপস্থিতিতেও। তার আচরণ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন, যৌনতাপূর্ণ, আক্রমণাত্মক এবং আধিপত্যশীল। এটি আমাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। আমি ছোট ছিলাম এবং ভেবেছিলাম কোনো বিপদে পড়ি কিনা।’

এসব অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছিলেন গুয়াচ্চি। তার পক্ষে সাক্ষী দিতে ১০০ জনের বেশি লোকের তালিকা সরবরাহ করে রেখেছিলেন। যাদের মধ্যে একজন সাক্ষী জানান, ‘তিনি সর্বদা মূল্যবোধ, সাহচর্য, পেশাদারিত্ব এবং পরিবারের সদস্য হয়ে কাজ করেছেন। কিছু ফুটবলারের খেলার ইচ্ছা পূরণ না করায় বিরক্ত হয়ে তারা গুয়াচ্চির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।’