চ্যানেল আই আয়োজিত শিক্ষা নিয়ে প্রাক বাজেট আলোচনায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা তাদের দেয়া মতামতে বলছেন, কোচিং ও গাইড বই বন্ধ করে শ্রেণি শিক্ষা জোরদার না করলে দেশে মানসম্মত শিক্ষা সম্ভব নয়। এছাড়া পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও আইসিটি শিক্ষায় টেকসই বিনিয়োগের কথাও বলেছেন তারা। রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ২০১৭–১৮ অর্থবছরের শিক্ষা বাজেট আলোচনায় তৃণমূলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের এসব বক্তব্যের সঙ্গে আমরা ঐকমত্য পোষণ করছি। আলোচনায় অংশ নেয়া ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী বলছে, তারা স্কুলের বাইরে কোচিং করে, আর পাঠ্যবইয়ের বাইরেও তাদেরকে একাধিক গাইড বই পড়তে হয়। আমরা মনে করি, শুধু রাজবাড়ী নয়, বরং সারাদেশের চিত্র একই ধরনের। সারাদেশে্ই চলছে কোচিং ব্যবসা। শিক্ষার্থীদের নম্বর কমিয়ে দিয়ে কোচিংয়ে যেতে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে। শিক্ষা বাজেট আলোচনায় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া জানিয়েছেন, শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ আগের চেয়ে বাড়ছে। কিন্তু আমরা মনে করি, শুধু বাজেট বাড়ালেই হবে না, বরং এই বাজেটের যথাযথ ব্যবহার এবং কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে স্কুলে শেখানোর বদলে শিক্ষকদের কোচিংপ্রীতি এবং গাইড নির্ভরতা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অবশ্য শিক্ষকদের অভিযোগ, পাঠ্য বইয়ে সব ধরনের উত্তর না থাকায় নোট বইয়ের সাহায্য নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। পাঠ্যবইগুলোকে শিক্ষার্থীদের কাছে আরো সহজ ও বোধগম্য করাসহ শিক্ষকদের আরও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নোট প্রকাশনীগুলোকেও নিরুৎসাহিত করতে হবে। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো- নোটবই ও গাইড বিক্রি বন্ধ এবং শিক্ষকদের কোচিংপ্রীতি বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায় না। আর প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো গোঁদের ওপর বিষফোঁড়া তো রয়েছেই। তাই ভবিষ্যতের প্রকৃত দক্ষ ও মানবিক প্রজন্ম তৈরির লক্ষ্যে মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে উপরোক্ত বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান রইলো।