করোনার সংক্রমণ এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে, আজ করোনায় সর্বোচ্চ ২৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাই এবছরের কোরবানিতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন খুবই জরুরি। পশু জবাইয়ের পরে বর্জ্য দ্রুত পরিষ্কার ও চামড়া ব্যবস্থাপনায় যেনো কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেবিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
রাজধানীতে কিছুটা বিধিনিষেধ থাকলেও গ্রামে-গঞ্জে যেখানে সেখানে কোরবানি করা হয়, যা পরবর্তীতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে মানুষের জীবন যেমন দূর্বিষহ করে তোলে, তেমনি পরিবেশও নষ্ট হয়। এক্ষেত্রে যত্রতত্র নয়, একটা নির্দিষ্ট জায়গায় কম জনসমাগম ব্যবস্থায় পশু জবাইয়ের ব্যবস্থা করা উচিত প্রশাসনিক ও সামাজিকভাবে। এতে করে সংক্রমণ ঝুঁকি যেমন কমবে, তেমনি পরিবেশও ভাল থাকবে। বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করাসহ তাদের বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করা যেতে পারে, কাজের গতি বাড়ানোর জন্য।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি আরেকটি বিষয় জরুরি, তা হচ্ছে চামড়া ব্যবস্থাপনা। গেল কয়েক বছর হলো দেশজুড়ে চামড়া বিষয়ে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে। সঠিক নিয়মে চামড়া সংগ্রহ থেকে শুরু করে দাম না পাওয়া নিয়ে চরম হতাশা রয়েছে সারাদেশে। এবিষয়ে নজর দেয়া জরুরি।
কোরবানির পশুর চামড়ার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সিটি করপোরেশন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তিনটি কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কোরবানির চামড়া যথাযথভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতা পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি, মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা এবং অন্যান্য স্থানে সংরক্ষিত কাঁচা চামড়ায় যথাসময়ে প্রয়োজনীয় লবণ প্রয়োগ নিশ্চিত করণের কাজ করবে কমিটিগুলো। পচন রোধে কোরবানির দিন হতে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কাঁচা চামড়া যাতে ঢাকা অভিমুখে পরিবহন না করা হয়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দ্রুত সম্পন্ন করবে তারা।
জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিটিভিসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহে টিভি কর্মাশিয়াল (টিভিসি) প্রচার, ৫টি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দৈনিকে গণবিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। এসব উদ্যোগ বেশ ইতিবাচক।
নানা প্রশাসনিক ও সামাজিক উদ্যোগের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় কোরবানির আগে ও পরে দেশের সার্বিক পরিবেশ সুন্দর থাকুক, এই আমাদের প্রত্যাশা।