চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

কৃষকের ভাষা বোঝে ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’

কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের পরিকল্পনা, উপস্থাপনা ও পরিচালনায় চ্যানেল আইয়ের কৃষি বিষয়ক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’। যে অনুষ্ঠানটি পথচলার ১৫ বছরে পদার্পণ করছে আজ (২১ ফেব্রুয়ারি)।

২০০৪ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন যাত্রা শুরু করে এ অনুষ্ঠান। দীর্ঘ পথচলার মধ্য দিয়ে ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠান জনকল্যাণ ও গণমুখিনতায় গণমাধ্যমের ভূমিকার এক নতুন রূপ দিয়েছে। যা গোটা বিশ্বেই এক বিরল উদাহরণ।

সেই সাফল্যে ভাসছে গোটা ‘হৃদয়ে মাটি মানুষ’ টিম। তাদের পনেরো বছর পূর্তিতে এসেছিলেন চ্যানেল আই এর জনপ্রিয় টকশো ‘তারকা কথন’ অনুষ্ঠানে। অনন্যা রুমার প্রযোজনায় মৌসুমি বড়ুয়ার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শাইখ সিরাজ, সিনিয়র নিউজ এডিটর ও প্রধান গবেষক আদিত্য শাহীন, ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া চ্যানেল আই ও অনলাইনের এডিটর তৌফিক আহমেদ, সিনিয়র ভিডিও এডিটর মশিউর রহমান।

এ সময় শাইখ সিরাজ বলেন, ২০০৪ সালের আজকের এই দিনে ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ যাত্রা করে। ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘মাটি ও মানুষ’ প্রচার হতো। এরপর চ্যানেল আই গোছানোর পর শুরু করতে চেয়েছিলাম ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’। তখন দেশের কিছুটা ক্রাইসিস ছিল। খাদ্য, শিক্ষা সবকিছুর। চ্যানেল আইতে অনুষ্ঠানটি শুরুর আগেই ভেবেছিলাম একটি বিশেষ দিন থেকে এটি যাত্রা শুরু করবো। ওই চিন্তা থেকে ২০০৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’।

তিনি বলেন, কৃষির অবস্থানটা এখন আর আগের মতো নেই। কাদার মধ্যে নেমে কাজ করতে হবে এমনটা নয়। কৃষির অবস্থানটা পাল্টেছে। নতুন নতুন প্রযুক্তি এসে কৃষিকে বদলে দিচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে কৃষিতে আমূল পরিবর্তন এসেছে। অনেক শিক্ষিত তরুণ বড় বড় কৃষির ভেঞ্চার করছে, উদ্যোক্তায় পরিণত হচ্ছে। সবকিছু এসেছে এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

অনুষ্ঠান চলাকালে কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ফোন করে শাইখ সিরাজ ও এই অনুষ্ঠানের টিমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটি আমার প্রাণের অনুষ্ঠান। সবসময় এই অনুষ্ঠানটি আমি দেখি। আমার লেখালিখির অনেক ক্ষেত্রে সয়াহক হিসেবে কাজ করে ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’।

সিনিয়র নিউজ এডিটর ও প্রধান গবেষক আদিত্য শাহীন বলেন, আমি কখনও কল্পনাও করতে পারিনি এমন আয়োজনের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে পারব। এই অনুষ্ঠানের মূল তারকা হচ্ছে মাঠের কৃষক। আর শাইখ সিরাজ এই অনুষ্টানের মাধ্যমে কৃষকের ন্যায় পালের ভূমিকা পালন করছেন। অনুষ্ঠানে কৃষকের কথা যেভাবে তুলে ধরা হয়, সেটা আগে কেউ কখনও বলেনি।

একবার এক কৃষক কেঁদে বলেছিলেন, কৃষকের কোনো স্কুল নেই। আমরা কোথায় কথা বলব? আমাদের একটা প্ল্যাটফর্ম দরকার যেখানে আমরা কথা বলতে পারবো। এই অনুষ্ঠানটি কৃষকদের সেই প্ল্যাটফর্ম দিয়ে দিল। প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মুসা বলেছিলেন, এই অনুষ্ঠানটি গ্রামের মানুষকে শহরে টেনে এনেছে আর শহরের মানুষকে গ্রামে নিয়ে গেছে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠানটি সেতু বন্ধনের কাজ করছে। কৃষকের ভাষা সরাসরি সরকারের কাছে পৌঁছে না। কৃষক কথা বলেন শাইখ সিরাজের কাছে। শাইখ সিরাজের কাছ থেকে আমরা তথ্য পাই। কৃষকের সঙ্গে সরকারের অনুঘটকের কাজটা করে দিচ্ছে ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’। কৃষকের ভাষা বোঝে ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’।

চ্যানেল আই অনলাইনের ডিজিটাল অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া এডিটর তৌফিক আহমেদ বলেন, ২০০৯ সালের শেষের দিক থেকে টেলিভিশনের পাশাপাশি সোশ্যাল মাধ্যমগুলোতেও ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ প্রচার হচ্ছে। টেলিভিশনে দেখার সঙ্গে সঙ্গেও ফেসবুক বা ইউটিউবে অনুষ্ঠানটি দেয়ার পর বিভিন্ন মানুষের মতামত পাওয়া যায়। এর ফলে আমরা বুঝতে পারছি কেমন হচ্ছে অনুষ্ঠানটি। সোশ্যাল মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে আরো বেশি মানুষের কাছে কীভাবে পৌঁছানো যায়, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।

ছবি: এস.এম নাসির