হলের নিরাপত্তা জোরদার এবং নিয়মকানুন বজায় রাখার দাবি জানিয়েছিলেন সাধারণ ছাত্রীরা। কিন্তু তাদেরকে ‘হুমকি দিতে’ গভীর রাতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলে পুলিশের পুরুষ সদস্যরা ঢুকে পড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই হলের ছাত্রীদের অভিযোগ, সোমবার সকালে ওই ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করতে নেমে আবারো হুমকি পেয়েছেন তারা।
তাদের দাবি, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে হলে সাদা পোশাকে পুলিশের পুরুষ সদস্যরা ঢুকে পড়ে।
অবশ্য হলটির প্রভোস্ট বলছেন, হলে পুলিশ প্রবেশের কোনো ঘটনা ঘটেনি। টহলরত পুলিশ গেটে এসে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছে মাত্র।
‘পুরুষ পুলিশ’ ঢোকার প্রতিবাদ এবং সাধারণ ছাত্রীদের নিরাপত্তা জোরদারের দাবিতে সোমবার সকাল সাড়ে এগারটার দিকে মানববন্ধন করেন ওই হলের শতাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী। সেখানেও তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করেন তারা।
হলটির আবাসিক এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের একজন ছাত্রী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হলে অনিয়ম চলে আসছে। কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই দুই/তিন মাস আগে একসঙ্গে প্রায় ৩০ জন ছাত্রী হলে ওঠে। হলের সিনিয়র ছাত্রীরা হলে সিট না পেলেও এক ‘পলিটিক্যাল আপুর’ কথা বলে জুনিয়ররা সিট পেয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে হলের সিনিয়রদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল।
‘‘আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলায় আমাদের ভয়ভীতি দেখাতে গভীর রাতে হলে পুরুষ পুলিশ ঢোকানো হয়েছে। রাত আড়াইটার দিকে একাধিক পুলিশ সদস্য হলের ভেতরে প্রবেশ করে।’”
নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের প্রভোস্ট (দায়িত্বপ্রাপ্ত) সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান শিকদার বিষয়টি অস্বীকার করে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া হলে পুলিশ প্রবেশের প্রশ্নই আসে না। হলে পুলিশ প্রবেশ করেনি। টহলরত পুলিশ সদস্যরা হল গেটে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছে, ভেতরে ঢোকেনি।
এ ব্যাপারে নিরাপত্তাকর্মীরা লিখিতভাবে জানিছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, হলে নিরাপত্তাহীনতা এবং নিয়ম শৃঙ্খলার দাবিতে লেখা অভিযোগ প্রোভস্টের কাছে পৌঁছানোর আগেই ছাত্রীদের মানববন্ধনের পেছনে অন্য কোনো গোষ্ঠীর মদদ রয়েছে।
আসাদুজ্জামান শিকদারের দাবি, একটা ইস্যু তৈরি করতে কেউ এর পেছনে কাজ করছে।
ছাত্রীদের অভিযোগ, রোববার রাতে একটি সিএনসি চালিত অটোরিক্সা এবং একটি বাইকে করে পুলিশ সদস্যরা হলে আসে। তাদের মধ্য থেকে দুইজন হলে প্রবেশ করে হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ কর্মী আইভি রহমানের সঙ্গে কথা বলেন।
মানববন্ধনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেনের নেতৃত্বে মহড়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ছাত্রীরা।
আন্দোলনকারীরা বেশি বাড়াবাড়ি করলে তাদেরকে ‘ছাত্রী সংস্থার সদস্য’ (জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রী সংগঠন) বলে ধরিয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।
এমন হুমকির বিষয়ে ইলিয়াস হোসেন সবুজ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আজকে যারা মানববন্ধন করেছে তাদের অর্ধেকেরও বেশি ‘ছাত্রী সংস্থার’ সদস্য; যাদের নামের তালিকা এসপি সাহেবের কাছেও রয়েছে।
“মানববন্ধনে তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন বক্তব্য দেওয়ায় আমরা গিয়ে বলেছি, সাধারণ ছাত্রীদের কোন সমস্যা থাকলে আমরাও প্রশাসনকে বলবো; কিন্তু সরকারবিরোধী বক্তব্য কেন?”
তার দাবি, সাধারণ ছাত্রীদের কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি।