‘দীর্ঘ ১৩ বছরের সহযোদ্ধার আজকের ঘটনায় নিশ্চিতভাবেই কিছু বিনিদ্র রাত কাটবে আমার। তবে কিছুদিন পর এটা ভেবেও শান্তিতে ঘুমাতে পারব যে, তার নেতৃত্বেই ২০২৩ সালে আমরা বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলব। কারণ নামটি তো সাকিব আল হাসান…!!!’
কথাগুলো মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার। সাকিবের দুই বছরের নিষেধাজ্ঞায় যখন স্তব্ধ বাংলাদেশ, বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ ক্রীড়াপ্রেমীরা, তখন দীর্ঘ সময়ের সহযোদ্ধার দুঃসময়ে মনের রক্তক্ষরণের কথা এভাবেই লিখেছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। বেদনা আর আশার কথা প্রকাশ করতে বেছে নিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে।
হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, মাশরাফী বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে বলছেন আশার কথাও। সাকিব নিজেও শুনিয়েছেন দৃঢ়চিত্তে ফিরে আসার কথা। নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর মঙ্গলবার মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শক্তি সঞ্চয় করে ফেরার কথাই বললেন তিনি।
‘যেভাবে আপনারা আমাকে সমর্থন করে এসেছেন, বাংলাদেশের সব ক্রিকেট ভক্তরা, বাংলাদেশের সব মানুষরা, বিসিবি, সরকার থেকে শুরু করে মিডিয়া সবাই, আপনারা আমাকে যেভাবে সমর্থন করে এসেছেন, আমার ভালো ও খারাপ সময়ে। আশা করি এই সমর্থনটা থাকবে। আর এই সমর্থনটা যদি থাকে, আমি খুব শীঘ্রই ক্রিকেটে ফিরতে পারবো। এবং, আগের থেকে আরও শক্তিশালী ও ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবো। ধন্যবাদ সবাইকে।’
বেদনা বুকে পাথর চেপেছে সাকিবের আরেক সতীর্থ মুশফিকুর রহিমেরও। উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানও ফেসবুকে লিখেছেন বিজয়ীর মতোই ফিরবেন সবার প্রিয় সাকিব।
‘বয়স ভিত্তিক… আন্তর্জাতিক… ১৮ বছরের উপর একসঙ্গে ক্রিকেট খেলছি… এটা চিন্তা করাও খুব মন খারাপের যে তুমি ছাড়া মাঠে খেলতে হবে। আশা করি খুব শিগগিরই তুমি বিজয়ীর মতো ফিরে আসবে। সবসময়ই আমার এবং পুরো বাংলাদেশের সমর্থন তোমার সাথে আছে।’
খুব কাছের মানুষটির দুঃসময়ে সাকিবের স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরও বলছেন, খারাপ সময় কাটিয়ে আরও শক্ত হয়েই ফিরবেন সাকিব। ফেসবুক পোস্ট শিশির লিখেছেন, ‘কিংবদন্তিরা রাতারাতি কিংবদন্তি হয় না। তাদের অনেক ঝড়, উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। খারাপ সময় আসবেই, সেগুলোকে তারা শক্ত মনেই আলিঙ্গন করেন, এবং আমরা সবাই জানি সাকিব আল হাসান কতটা শক্ত প্রকৃতির। এটি এক নতুন যাত্রার শুরু। সে যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে। সে চোটের কারণেও ক্রিকেটের বাইরে ছিল, এবং সকলেই দেখেছি কী দারুণভাবে ফিরে এসেছে বিশ্বকাপে। সবকিছুই কেবল একটি সময়ের ব্যাপার মাত্র। সবার ভালোবাসা ও সমর্থনে আমরা অভিভূত। জাতি হিসেবে এ ঐক্যটাই আমাদের দরকার।’