বিদেশে ছেলের সঙ্গে মা ভাইবারে কথা বলতো। শেখ হাসিনার সরকার সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। বিএনপি সরকারের আমলে মা ভাইবার-ইমোতে কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলো কি না, এটা এখন বড় প্রশ্ন নয়।
সাকা চৌধুরী কে? আর মুজাহিদই বা কে? এটাও মায়ের কাছে প্রশ্ন নয়। সে তার ছেলের সঙ্গে কথা বলতে চায়। গতকাল শুনেছে ছেলেটার জ্বর। আজ আপডেট জানার জন্য মনটা উসখুস করছে। জঙ্গিবাদীরা এবার মুখে মুখে গ্রামে গ্রামে রটিয়ে দিলো শেখ হাসিনা ভাইবার বন্ধ করে দিয়েছে।
মায়ের কানেও খবরটা এভাবেই পৌঁছালো। মিডিয়ার প্রতি মানুষের আস্থা নেই, তাই মুখে মুখে সাঈদীকে চাঁদে দেখার ইনফরমেশন সে বিশ্বাস করে। সোশ্যাল মিডিয়াও গুজবের ভান্ডার। রেডিও মুন্না থেকে শুরু করে বাঁশেরকেল্লা, সত্য প্রচারেও তারা মিথ্যাচারকে হালাল মনে করে।
আর মূলধারার মিডিয়া চলছে পুঁজিবাদী মালিকের ইচ্ছায়। গণমাধ্যম যখন জনগণের কথা বলে না, তখন তারা কানে কানে যে কমিউনিকেশন, তাতেই আস্থা রাখতে বাধ্য হয়।
সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির রায় পরবর্তী নাশকতা ঠেকানোর উদ্দেশ্যে প্রান্তিক মায়ের ভাইবার বন্ধ করে দেয়াতো ‘পোড়ামাটি নীতি’র সাইডএফেক্ট। শত্রুপক্ষকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে মায়ের উদ্বেগকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ মেনে নেয়ার উপায় নেই।
এর বিপরীত গল্পটা আরো চমৎকার। কিন্তু থ্যাংকসলেস। প্রত্যন্ত গ্রামে থ্রিজি পৌঁছে গেছে। মা প্রবাসী ছেলেটার সঙ্গে ভাইবারে কথা বলছে। প্রবাসী স্বামীর চিঠি আসতো ১৫/২০ দিন পরপর। কোনো কোনো মাসে চিঠি আসতোই না।
সরকারের জবাবটা আসলে উইকেটকিপারের মতো। ক্যাচ ফেললেই গালিগালাজ, অথচ ধরার পর বলা হবে, এটা তোমার ডিউটি।
ইনফরমেশন টেকনোলজির এই দানবীয় উন্নয়নটা সরকারের ডিউটি, ভাইবার বন্ধ করে দেয়াটা স্রেফ ক্যাচ ফেলে দেয়া।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)