চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

কানাডায় সিরিয়ার শরণার্থী: মানবিকতা আর আতঙ্কের দ্বন্দ্ব

লিবারেল সরকারের একটি অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল সিরিয়ার শরণার্থীদের পুনর্বাসন। আরো স্পষ্ট করে বললে, এ বছরের মধ্যেই ২৫,০০০ সিরিয়ার শরণার্থীকে এদেশে আশ্রয় প্রদান। আগের ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল হারপার সরকারের ‘ফিয়ার এন্ড ডিভাইড’ নীতির বিপরীতে জনমানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনই ছিল তাদের এই নির্বাচনী অঙ্গীকার।

৩ বছরের সিরীয় শিশু আইলান কুর্দির ভূমধ্যসাগরে ভেসে আসা লাশের ছবি সাড়া বিশ্বে তোলপাড় ফেলেছিল। ঐ সময়টাতে বিশেষ করে সিরিয়ার শরণার্থীর বিষয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক স্পর্শকাতরতার সৃষ্টি হয় কানাডায়ও। কিন্তু নির্বাচনের আগে জনসাধারণের যে সমর্থন ছিল শরণার্থী আনার বিষয়ে সেটির প্রেক্ষাপট অনেকটাই যেন বদলে যায় প্যারিস ঘটনার পর। বলা চলে আশাবাদ যেন অনেকটাই পরিণত হয়েছে বেদনা, হতাশা এবং কিছুটা আতঙ্কেও।

সিরিয়ার শরণার্থী আনার বিষয়ে ইতিবাচক-নেতিবাচক নানান আলোচনা এলেও লিবারেলদের কাছ থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা সম্ভব হয়নি। তবে ইমিগ্রেশন-রিফিউজি-সিটিজেনশিপ মন্ত্রী জন ম্যাককালাম ইতিমধ্যে রিফিউজি প্ল্যান এর প্রাথমিক পরিকল্পনা অবহিত করেন মিডিয়ায়। এবং গত ২৩ শে নভেম্বর অটোয়ায় অনুষ্ঠিত এক  সভায় সব প্রদেশের প্রধান অর্থাৎ প্রিমিয়ারদের এবং টেরিটরি প্রধানদের ব্রিফ করা হয় শরণার্থী সেটেলমেন্ট বিষয়ে। অবশেষে ২৪ শে নভেম্বর, ইমিগ্রেশন-রিফিউজি-সেটেলমেন্ট মন্ত্রী জন ম্যাককালাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন ‘রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট প্ল্যান’। এসময় তাঁর সাথে ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেইন ফিলপট এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী হারজিৎ সাজ্জান।

এতে ৫ টি ধাপের কথা বলা হয়েছে। প্রথমতঃ শরণার্থী সনাক্তকরণ, এতে জর্ডান, লেবানন ও তুরস্কে অবস্থিত শরণার্থীদের সনাক্ত করা হবে মূলত জাতিসংঘের সংস্থা দ্বারা। দ্বিতীয়তঃ  আসার আগেই বিদেশে শরণার্থীদেরকে প্রসেস করা, অর্থাৎ সিকিউরিটি চেকআপ, মেডিকেল চেক আপ ইত্যাদি, যেখানে কানাডা থেকে প্রেরিত কর্মকর্তারাও থাকবেন। তৃতীয়তঃ যাতায়াত ব্যবস্থা, মূলতঃ চার্টার্ড কমার্শিয়াল এয়ারক্রাফট এবং প্রয়োজনে মিলিটারি এয়ারক্রাফটে করে আনা হবে শরণার্থীদের।  চতুর্থতঃ কানাডায় অভ্যর্থনা জানানো, এ পর্যায়ে আবারো হেলথ এবং আইডি চেক করা হবে। পঞ্চমতঃ সেটেলমেন্ট এ্যান্ড কমিউনিটি ইন্টেগ্রেশনঃ এ পর্যায়ে ভাষার ট্রেনিং, মেডিকেল সাপোর্ট, বাসস্থানের ব্যবস্থা, আর্থিক সহায়তা, ট্রমা কাউন্সেলিং ইত্যাদি।  

এই  ঘোষিত প্রোগ্রামে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রথমতঃ এতোদিন পর্যন্ত বলা হয়েছিল ২৫,০০০ শরণার্থীকে ১লা জানুয়ারীর মধ্যে আনা হবে। কিন্তু ঘোষণায় জানানো হয়েছে, ২৫,০০০ নয়, ১০,০০০ শরণার্থী আনা হবে এ বছরের মধ্যে। বাকী ১৫,০০০ আনা হবে ফেব্রুয়ারীর ২৯ তারিখের মধ্যে। সিবিসি (কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন) টেলিভিশনের এক জরিপে, একে নির্বাচনী ওয়াদা ভঙ্গ হিসেবে দেখেছেন মাত্র ১২ ভাগ মানুষ, বাদবাকী সবাই দেখেছেন এই সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে। দ্বিতীয়তঃ আগে বলা হয়েছিল পুরো ২৫,০০০ শরণার্থীই রাষ্ট্রের খরচে আসবেন। এখন বলা হচ্ছে ২৫,০০০ এর মধ্যে ১০,০০০ ই ব্যক্তিগত স্পন্সরে অর্থাৎ কমিউনিটি গ্রুপের স্পন্সরে আসছে (এটি অবশ্য আনুষ্ঠানিক ঘোষণার দু-তিনদিন আগেই মিডিয়ায় এসেছিল)। বাকী ১৫,০০০ রাষ্ট্রীয় খরচে। তবে প্রতিশ্রুত রাষ্ট্রীয় খরচে সর্বমোট ২৫,০০০ শরণার্থীই ২০১৬ অর্থাৎ আগামী বছরের মধ্যে এসে পৌঁছুবেন। 

তৃতীয়তঃ কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে শরণার্থী নির্বাচনের ব্যাপারে। এতে অধিকতর ভালনারেবল বা অরক্ষিত হিসেবে মহিলা, শিশু এবং পরিবারকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ‘পরিবারে’র বাইরের কোনো পুরুষ আপাতত অগ্রাধিকার তালিকায় নেই, এলজিবিটিকিউ কমিউনিটির সদস্য ছাড়া। তবে এ বিষয়টি ঘোষণার দিন দুই আগে মিডিয়ায় এলে নানান সমালোচনার অবতারণা হয়। বলা হয়, যুদ্ধে মা বাবা হারানো যুবক কিংবা বিপত্নীকদের বেলায় কি হবে? এছাড়া আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে এলজিবিটিকিউ কমিউনিটির অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি ও ছিলনা যেটি জোর সমালোচনার জন্ম দেয়। হয়তোবা এসব সমালোচনাকে বিবেচনায় নিয়েই আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় এলজিবিটিকিউদের ও ভালনারেবলদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চতুর্থতঃ শরণার্থীদের একাধিকবার সিকিউরিটি চেকের আওতায় আনা হবে। একবার আসার আগে, যেখানে ইতিমধ্যে কানাডিয়ান ফোর্সের সদস্যসহ ৫০০ জন কর্মকর্তা পাঠানো হয়েছে। আরেকবার এদেশে এসে পৌঁছুলে এখানকার বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তারা নিরাপত্তা চেক করবেন। 

শরণার্থীরা এসে মূলত উঠবেন টরেন্টো এবং মন্ট্রিয়লে। আর্মির ৬০০০ বেস তৈরী করা হয়েছে প্রাথমিক ব্যাকআপ হিসেবে। পরবর্তীতে এরা ৩৬ টি গন্তব্যে যাবেন। তাদের পূণর্বাসনে আগামী ছয় বছর ধরে ব্যয় হবে প্রায় ৫৬৪-৬৭৮ মিলিয়ন ডলার।

শরণার্থী আনার ক্ষেত্রে কতগুলো বিষয় সামনে চলে এসেছে, যেমনঃ বেঁধে দেয়া সময়সীমা, নিরাপত্তাজনিত ইস্যু এবং রাষ্ট্রীয় ব্যয়। এ সরকার ক্ষমতায় আসার প্রথম থেকেই শরণার্থী আনার ব্যাপারে ৩১ শে ডিসেম্বরের সময়সীমা নিয়ে অনেক সমালোচনা এবং আশঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে। এবং তাদের এই সময়সীমা ‘স্ব-আরোপিত’, ‘বিভ্রান্তিপূর্ণ’ ইত্যাদি নানা বিশেষণে অভিহিত হয়েছিল। আবার এও আশঙ্কা করা হচ্ছিল, শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে যেন-তেন ভাবে না আবার শরণার্থী আনার মতো স্পর্শকাতর বিষয়টি সম্পন্ন হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে এই সময়সীমা পিছিয়ে দেবার কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেন, সঠিকভাবে কার্যসম্পাদনের জন্যই এই সময়সীমা পেছানো, অন্য কোনো কারণে নয়। 

প্যারিসের ঘটনার পর নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে সবচেয়ে বেশি। অনেক বিশেষজ্ঞ এবং গবেষক যদিও শরণার্থীদের সন্ত্রাসী হবার চেয়ে পর্যটকদের সন্ত্রাসী হবার প্রবণতা অনেক বেশি বলে মনে করেন। পাবলিক সেফটি মন্ত্রী রালফ গুডাল বলছেন, শরণার্থী বিষয়ে তারা প্রথম থেকেই যত্ন সহকারে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এর বাইরে আর কোনো কথা নেই বলেন তিনি। আর চূড়ান্ত সময়সীমা পেছানোর ব্যাপারেও তিনি বলেন, নিরাপত্তা ইস্যু এখানে মুখ্য ছিলনা। বরং হোষ্ট দেশের এক্সিট ভিসা প্রণয়ন, শরণার্থীদের গ্রহণে দেশ এবং নাগরিকদের তৈরি হওয়া এসব বরং বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো প্রথম থেকেই পরিষ্কার জানিয়ে আসছেন, রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে দেশের নিরাপত্তার বিষয়টি তার বিবেচনায় সর্বাগ্রে।

রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট প্ল্যান ঘোষণার দুই দিন আগে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বিবিসি রেডিওতে ম্যাট গ্যালাওয়ের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন ‘নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের নজরদারিতে আছে, এবং আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ ও করছি। কিন্তু শরণার্থী আনার বিষয়টিকে নিরাপত্তার সঙ্গে এক করে ফেললে চলবেনা। মনে রাখতে হবে এই শরণার্থীরা সন্ত্রাসবাদের কারণেই আজ শরণার্থী। কাজেই সন্ত্রাসবাদের শিকার অসহায় মানুষকে এখানে ঠাঁই দেবার বিষয়। সন্ত্রাসবাদ সাথে নিয়ে আসা মানুষকে নয়। আর এটিও মনে রাখতে হবে, আমরা শুধুমাত্র সিরিয়ার শরণার্থীদেরই অভ্যর্থনা জানাবোনা, অভ্যর্থনা জানাবো আমাদের নতুন নাগরিকদেরও। একাধিকবার সিকিউরিটি চেকের ঘোষণায় নিরাপত্তার বিষয়টিরও আপাতত সুরাহা হয়েছে।

শরণার্থীদের জন্য যে পরিমাণ খরচ হবে সেটি নিয়েও সমালোচনা আছে যে এটি উচ্চাভিলাষী কি না। এছাড়া আসলেই ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়ায় সেটি নিয়েও নানান সমালোচনা আছে। বলা হচ্ছে অনুমিত ব্যয় প্রায় ৭০০ মিলিয়ন হলেও এটি ১ বিলিয়ন ডলারকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে, সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, মানবিক দিক ছাড়াও শরণার্থীরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠে এ সমাজেই অর্থনৈতিক ভূমিকা রাখবেন, প্রত্যাশা এমনই। প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো উদাহরণ হিসেবে তার মন্ত্রীসভার ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউশনস মন্ত্রী মারিয়াম মন্সেফের কথা উল্লেখ করেন যিনি ১০ বছর বয়সে আফগানিস্তান থেকে পিতৃহারা অবস্থায় শরণার্থী হিসেবে এসেছিলেন কানাডায়। আজ তিনি জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিই শুধু নন, একটি দায়িত্বশীল মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীও। কাজেই হয়তো এই আগত শরণার্থীদের মাঝেই লুকিয়ে আছে এরকম আরো মারিয়াম মন্সেফ।

সর্বশেষ আরেকটি বিষয় আলোচনায় এসেছে যে, এতো সংখ্যক শরণার্থীর সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণে দেশ প্রস্তুত কিনা। এর বিপরীতে বলা হচ্ছে রাষ্ট্রের পাশাপাশি বিশাল সংখ্যক কমিউনিটি স্পন্সর এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তৎপরতা নাগরিকদের ইতিবাচকতারই ইঙ্গিত দেয়। সম্প্রতি সিরিয়ার শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহকারী একটি সংগঠনের এক আয়োজনে উপস্থিত থেকে ইমিগ্রেশন-রিফিউজি-সিটিজেনশীপ মন্ত্রী জন ম্যাককালাম শরণার্থী আনার ব্যাপারে নির্বাচনী ওয়াদা ছাড়াও একটি সার্বিক বা হলিষ্টিক ফ্রেমওয়ার্কের কথা ও বলেন। এছাড়াও তিনি বলেন, পেশাগতভাবে অর্থনীতির মানুষ হওয়ায় ‘মানবিক’ বিষয়াদিতে যুক্ত হবার সুযোগ তেমনভাবে তার হয়ে উঠেনি। কিন্তু এই শরণার্থী আনার ব্যাপারে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যুক্ত হবার মাধ্যমে তিনি যেন সত্যিকারার্থে ‘দেশপ্রেম’ প্রকাশ করবার সুযোগ পেলেন। এখানে উল্লেখ্য, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শরণার্থী আশ্রয়দানে এবং পুনর্বাসনে কানাডার সাফল্যের ইতিহাস ও আছে। ১৯৭৯-৮০র সময়কালে ৬০,০০০ ইন্দো-চাইনীজ শরণার্থী এসেছিল কানাডায় প্রতিমাসে ৪৫০০ করে, অক্টোবর থেকে জুন পর্যন্ত। তাদের আত্ত্বিকরণ বেশ সুচারুরূপেই করতে পেরেছিল কানাডীয় সরকার এবং নাগরিকেরা। 

রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট প্ল্যান ঘোষণার পর, নভেম্বরের ২৬ তারিখ, অটোয়ার পার্লামেন্ট হিল থেকে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রী মারি ক্লদ বিবোঁ ঘোষণা দিয়েছেন, ২৫,০০০ শরণার্থী এবং ইমার্জেন্সী রিলিফ ফান্ড ছাড়াও কানাডা সরকার খুব শীঘ্রই আরো ১০০ মিলিয়ন ডলার দিবে ইউএনএইচসিআরকে সিরিয়ার শরণার্থীদের সহায়তার জন্য ইমার্জেন্সী হিউম্যানিটারিয়ান ফান্ড হিসেবে।

সিরিয়ার শরণার্থীর বিষয়ে কানাডীয় সরকারের এক্কাট্টা অবস্থান এই অঞ্চলের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ, যেখানে প্যারিসে হামলার পর আমেরিকার ২৮ জন সিনেটর তাদের স্টেটে সিরিয়ার শরণার্থী প্রবেশ করতে দিবেন না বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এবং প্রবল আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে মাত্র ১০,০০০ সিরিয়ার শরণার্থীকে নেবার কথা জানিয়েছে আমেরিকা। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বরাবরই বলে আসছেন এই দেশের নাগরিকদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে তার সরকার বদ্ধপরিকর। দেশের জনগণ বিরোধী কিংবা দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত, চুক্তি কিংবা কোনো জোট গঠনে তিনি আগ্রহী নন বলেও জানান দিয়েছেন তিনি।

প্যারিস ম্যাসাকার যেমন ইসলামী সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আইএস এর সন্ত্রাসী রূপ অধিকতর উন্মোচন করেছে, ঠিক একইভাবে এটি আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে এক অনিঃশেষ এবং চক্রাকার সন্ত্রাসের কথা, যার ফলে নিহত হয়েছে ২,৫০,০০০ সিরিয়ার মানুষ, মহিলা-পুরুষ-শিশু বাস্তুহারা হয়েছে ১০ মিলিয়নের বেশি, ৪ মিলিয়নের বেশি জীবন রক্ষার্থে আশ্রয় নিয়েছে জর্ডান, লেবানন এবং তুরস্কে। এই শরণার্থীরা একই চরমপন্থী মুসলিম সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর শিকার, যার শিকার হয়েছে ফ্রান্স।

লিবারেল সরকারের আপাত ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়ে এক ধরনের স্বস্তির সুবাতাস বইয়েছে গোটা দেশে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত অনেক প্রশ্নের ও অবসান হয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত প্ল্যান এর মাধ্যমে। ‘ফিয়ার এন্ড ডিভাইড’ এর বিপরীতে ‘কম্পেশনেট ট্র্যাডিশন’ ফিরে পেতে চাওয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকরাই ভোট দিয়ে রক্ষণশীলদেরকে সরিয়ে ক্ষমতায় এনেছে লিবারেলদের। সিরিয়ার শরণার্থীর আত্ত্বিকরণ কানাডার একটি জাতীয় প্রজেক্ট, যার সম-অংশীদার রাষ্ট্র এবং এর জনগণ। কাজেই এর ভালো-মন্দের দায়ও সবার।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)