সাগরে ডুবে যাওয়া তিন বছরের কুর্দিশ শিশুটির পরিবার কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েও পায়নি। কানাডা তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখান করেছিলো।
গণমাধ্যমে সাগরে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা আয়লান কুর্দির নিথর দেহের ছবি প্রচারিত হলে বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। সেই প্রতিক্রিয়ার ধাক্কা লাগে কানাডার নির্বাচনী রাজনীতিতেও।
আয়লানের মৃত্যুর ঘটনায় কানাডার ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ও ইমিগ্রেশন মন্ত্রী ক্রিস আলেক্সান্ডার তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা সাময়িকভাবে স্থগিত করছেন বলে জানিয়েছে টরন্টোভিত্তিক অনলাইন ম্যাগাজিন ‘নতুনদেশ’।
বৃহস্পতিবার সকালে কানাডার টেলিভিশন চ্যানেল ‘সিটিভি’তে তাঁর একটি সরাসরি সাক্ষাতকার নির্ধারিত ছিলো। মন্ত্রী সেটিও বাতিল করে দেন।
এনডিপির এমপি ফিন ডনলে দাবি করেছেন, তিনি গত মার্চ মাসে আয়লানের পরিবারের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনটি ইমিগ্রেশন মন্ত্রীর কাছে দিয়েছিলেন। গত জুন মাসে কানাডা ইমিগ্রেশন রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখান করে।
যুদ্ধে বিপর্যস্ত সিরিয়ার কোবানি শহরের এই পরিবারটি ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে ভিন্ন কোনো দেশে আশ্রয়ের চেষ্টা করছিলো। ইউরোপের কোনো দেশে শান্তির খোঁজে তিন বছরের শিশু সন্তান আয়লান ও পাঁচ বছরের গালিপ এবং স্ত্রী রেহানকে নিয়ে নৌকায় করে ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছিলেন তার পিতা আব্দুল্লাহ। তুরস্কের সমুদ্র তীরের কাছাকাছি এসে ডুবে যায় নৌকাটি। তারপর সব শেষ। আব্দুল্লাহ নিজে উদ্ধার পেলেও ততোক্ষণে চিরশান্তির দেশে চলে গেছে তার দুই শিশুপুত্র আর স্ত্রী।
তুরস্কের বোদরাম সৈকতে ভেসে আসে আয়লানের দেহ। লাল-টি শার্টি, নীল হাফ প্যান্ট আর জুতাজোড়া তখনও তার পায়ে। উল্টো হয়ে থাকা দেহটির ছবি প্রকাশিত হয় তুরস্কের গণমাধ্যমে। বিশ্বগণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় গুরুত্বের সাথে। তোলপাড় শুরু হয় বিশ্বজুড়ে।
আগামী ১৯ অক্টোবর কানাডার জাতীয় নির্বাচনের সকল ধরণের প্রচারণা কাজ স্থগিত রাখার ঘোষনা দিয়ে ইমিগ্রেশন মন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আয়লান কুর্দির মৃত্যুর মর্মান্তিক ছবি এবং তার ভাই ও মায়ের মৃত্যুর সংবাদ বিশ্বব্যাপী মানুষের হৃদয়কে ভেঙ্গে দিয়েছে। আর সব কানাডিয়ানের মতোই ছবিটি আমাকেও ব্যথিত করেছে।”
তিনি জানান, কুর্দি পরিবারের ঘটনাসমূহ এবং আবেদনের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে তিনি মন্ত্রণালয়ের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।