এই শতকের ভয়াবহ মহামারি করোনার জন্য সারা পৃথিবী যেনো থমকে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাত অর্থনীতি তারপর শিক্ষাখাত। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বন্ধ করে দিতে হয়েছে এই মহামারির কারণে। বছরের শুরু থেকেই সব প্রতিষ্ঠান দেশে দেশে লকডাউন করে দিতে হয়েছে। বিশেষ করে গরীব দেশের অর্থনীতি এতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। তারপরও আমাদের অর্থখাত ধীরে ধীরে চালু হলেও শিক্ষা কার্যক্রম এখন পর্যন্ত এক ধরণের স্থবির।
চ্যানেল আই অনলাইন সংবাদে জানা যায়: করোনাভাইরাস বিশ্বমহামারির কারণে ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা যথা সময়ে গ্রহণ সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ড.দীপু মনি। তিনি বলেছেন: সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে আমরা তাদের তিন মাস ক্লাস করাতে চাই। সে কারণে হয়তো এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দু’এক মাস পিছিয়ে যাবে। করোনা সংক্রমণের কারণে এ বছরের প্রায় সব পরীক্ষাই বাতিল বা ভিন্ন উপায়ে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। চলতি বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা, অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। সর্বশেষ এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছে। জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের আলোকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। করোনা মহামারির মধ্যে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়।
করোনা মহামারির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া জরুরি ছিল। কিন্তু দীর্ঘসময় যাবৎ এই বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম সংকটে। তাদের পড়ালেখার চাপ এখন তারা কতটা সহ্য করতে পারবে সেটা দেখার বিষয়। বিশ্বের বিভিন্ন করোনাক্লান্ত দেশগুলোতেও শিক্ষা কার্যক্রম চালুতে সেসব দেশের সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমিয়ে ধারাবাহিক শিক্ষা কার্যক্রমসহ পরীক্ষা কার্যক্রম মোটামুটি স্বাভাবিক বলা যায়। যেহেতু করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে সেজন্য হয়তো সরকার সে পথে যায়নি। তারপরেও এ বিষয়ে বিকল্প ও কার্যকর পরিকল্পনা করে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাদের আশাবাদ। আমরা আরও আশা করি পরীক্ষা বারবার পিছিয়ে দিয়ে শিক্ষাজীবন ব্যাহত না করে অন্য উপায়ে শিক্ষার্থীদের জীবনের মূল্যবান সময় বাঁচানোর জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারের নিশ্চয় এ বিষয়ে আরও বিকল্প চিন্তার অবকাশ আছে।