চীনের সাংহাইয়ে করোনা আক্রান্ত শিশুদের মা-বাবা থেকে আলাদা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
রয়টার্সের সাথে শেয়ার করা একটি কোয়ারেন্টাইন হাসপাতালের উইচ্যাট গ্রুপের পোস্ট অনুসারে কিছু ক্ষেত্রে তিন মাস বয়সী শিশুদের তাদের বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের থেকে আলাদা করা হচ্ছে। একটি পোস্টে বলা হয়েছে একটি ঘরে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ছাড়া আটটি শিশু রয়েছে।
সাংহাই কিন্ডারগার্টেন থেকে পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সী বিশ জনেরও বেশি শিশুকে তাদের পিতা-মাতা ছাড়াই একটি কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার চীনের সাংহাইয়ে ছয় হাজার উপসর্গবিহীন করোনা শনাক্ত হয়েছে। পাশাপাশি লক্ষণ বিহীন ২৬০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সাংহাইয়ে করোনার সর্বশেষ প্রাদুর্ভাব প্রায় এক মাস আগে শুরু হয়েছিল এবং স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সোমবার থেকে শুরু হওয়া একটি দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৬ মিলিয়ন মানুষকে লকডাউন করেছে।
গত ২৬ মার্চ এথার ঝাও তার দেড় বয়সী মেয়েকে নিয়ে সাংহাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়। করোনা পজেটিভের তিন দিন পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলেন মেয়েকে তার কাছ থেকে আলাদা না করার জন্য। কিন্তু হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ সেটা শুনেনি। কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র সংক্ষিপ্ত বার্তায় জানিয়েছে তার মেয়ে ভালো রয়েছে।
এথার ঝাও বলছিলেন, ‘‘কোনও ছবি নেই, আমি খুব উদ্বিগ্ন, আমার মেয়ে কী অবস্থায় আছে তা আমি জানি না, ডাক্তার বলেছেন সাংহাইয়ের নিয়ম হল শিশুদের অবশ্যই নির্দিষ্ট পয়েন্টে, প্রাপ্তবয়স্কদের কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে পাঠাতে হবে এবং আপনাকে শিশুদের সাথে যেতে দেওয়া হবে না।’
এদিকে চীনে তাদের পিতামাতার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করোনা আক্রান্ত শিশুদের কান্নাকাটির চিত্র ভাইরাল হওয়ার পরে ঝাও আরও আতঙ্কিত।
চীনের ওয়েইবো এবং ডুয়িন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করা ছবি এবং ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কান্নারত শিশুদের তিনটি খাটে রাখা হয়েছে। একটি ভিডিওতে, হামাগুড়ি দেওয়া এক শিশু বিছানা থেকে ঠেলে বেরিয়ে আসছিল৷ যদিও ভিডিওগুলিতে কয়েকজন প্রাপ্তবয়স্ককে দেখা যায়, তবে তারা শিশুদের সংখ্যার তুলনায় বেশি।
শনিবারের মধ্যে, মূল পোস্টটি ওয়েইবো থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল কিন্তু হাজার হাজার মানুষ মন্তব্য করতে এবং ছবিগুলি পুনরায় পোস্ট করতে থাকে।
একজন পোস্টকারী বলছিলেন, ‘এটি ভয়ঙ্কর’, ‘কীভাবে সরকার এমন একটি পরিকল্পনা নিয়ে আসতে পারে?’ আরেকজন বলল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে ছবিগুলো যাচাই করতে পারেনি।